জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুরের সদর উপজেলায় এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে মামলার পর মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ১০ নম্বর শ্রীপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে আব্দুল হকের ছেলে শাওনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ দিকে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অবস্থার অবনতি হলে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে, ঘটনাটিতে পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা করলেও প্রথম দিকে ধর্ষণের মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ নির্যাতিতার।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানায়, গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঘর থেকে বাইরে বের হলে প্রতিবেশী ছানোয়ার, শাওন ও রফিজ উদ্দিন তাকে বাড়ির সীমানা থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ওই গৃহবধূকে ছানোয়ারের বাড়ির পেছনের একটি জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে এবং গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এরপর ওই গৃহবধূকে ছানোয়ারের বাড়িতে আটক রাখে অভিযুক্তরা।
এ দিকে, খবর পেয়ে তার স্বামী খলিলুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবাদ জানালে তাকেও মারধর করে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর। পরে নিহত কাঠমিস্ত্রি খলিলুর রহমানের লাশ তার বাড়ির পাশের কাঁঠাল গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। এ ঘটনার পরদিন শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার স্বামীর লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে এবং থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে।
তবে, হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের বিষয়ে পুলিশ শুরুতে কোনো মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূসহ নিহতের বাবা ইমান আলীর।
এ দিকে, গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘পুলিশের কাছে বারবার ধর্ষণের কথা বললেও পুলিশ আমাদের কথা পাত্তা দেয়নি বরং নিহত খলিলের ময়না তদন্ত করে অপমৃত্যুর মামলা করে। এ ঘটনার পর ক্রমাগত ভুক্তভোগীর অবস্থার অবনতি হলে আমরা নিজেরাই সোমবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।’
এ ব্যাপারে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. হাসানুল বারী শিশির দৈনিক অধিকারকে জানান, ‘প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। তবে, তাকে গাইনি বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা করলে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে।’
এ দিকে, জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান দৈনিক অধিকারকে জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা। তবে, ধর্ষণের অভিযোগের কথা অস্বীকার করে তিনি জানান, ধর্ষণের ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি, হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
পরবর্তীকালে ওসির এই বক্তব্য শোনার পর সোমবার রাতেই থানায় এসে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ ধর্ষণের মামলা দায়ের করলে মঙ্গলবার সকালে আব্দুল হকের ছেলে শাওনকে গ্রেফতার করা হয়।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড