চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় একটি বাড়িতে গ্যাস পাইপলাইনের রাইজার বিস্ফোরণে নিহত সাতজনের পরিচয় মিলেছে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেলেও বাকি একজনের পরিচয় পরে পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশঘরে সারাদিন পড়ে থাকা লোকটির নাম মাহমুদুল হক (৩০)। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ায় তেইল্যাকাটা সেনেরচরে তার বাড়ি। মাহমুদুলের বাবার নাম আবুল কাশেম। তিনি নগরীর বাকলিয়ার ভেড়া মার্কেটের বেলাল কলোনিতে থাকতেন। পেশায় একজন রিকশাচালক ছিলেন। মাহমুদুলের সন্ধানে তার ছোট ভাই এসেছিল বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন পটিয়ার মেহেরআটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া (৫০)। তিনি শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী পলাশ বড়ুয়ার স্ত্রী। দুর্ঘটনার সময় তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। অ্যানি বড়ুয়ার দুই সন্তান বড়জন সদ্য সমাপ্ত জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, অপরজন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। নিহত অ্যানি বড়ুয়ার পিতার বাড়ি কক্সবাজারের রামুতে। স্বামীর বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়।
বাসা থেকে বের হয়েছিলেন ফারজানা আক্তার (৩২) ও তার ছেলে আতিকুল ইসলাম সুমন (১১)। সুমনকে নিয়ে ব্রাদার্স ফ্লেভিয়ান কিন্ডারগার্টেনে যাওয়ার পথে গ্যাস পাইপলাইনের রাইজার বিস্ফোরণে মারা যান তারা। নিহত ফারজানার স্বামী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান অপর সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে কোর্টে গিয়েছিলেন। চমেক হাসপাতালের মর্গে স্ত্রী ও সন্তানের লাশ সনাক্ত করার পর তিনিও অজ্ঞান হয়ে পড়েন। নিহত ফারজানার বাড়ি সাতকানিয়া।
বাকলিয়া বাস্তুহারা কলোনিতে বসবাস করতেন রং মিস্ত্রি নুরুল ইসলাম (৩০)। তিনি কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনিও। চমেক হাসপাতাল মর্গের সামনে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তার স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা। নিহত নুরুল ইসলামের খালাতো ভাই সুলতান মাহমুদ জানান, তাদের বাড়ি উখিয়ায়। দুই বছর আগে বিয়ে করেছিলেন নুরুল ইসলাম। তার একবছর বয়সী একটা ছেলে রয়েছে।
আরেকজন নিহত মো. সেলিম পেশায় ভ্যান চালক। বাড়ি মহেশখালীতে। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকায় টাইলস মার্কেটে কাজ করতেন। অপরজন নিহত আবদুস শুক্কুর পেশায় রিকশাচালক। তার বাড়ি পটিয়ায়। রবিবার বিকাল সোয়া ৪টায় স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করে লাশ বুঝে নিয়েছেন বলে জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটা এলাকার ব্রিকফিল্ড রোডে এ ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন নয়জন। আহতদের একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি আটজনকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড