নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের গুরুদাসপুর-নাজিরপুর সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করে রাতের অন্ধকারে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। সড়কের বেডের পুরনো ইটগুলো তুলে সেই ইটের খোয়া তৈরি করা হয়েছে। সেই খোয়া আবার সড়কেই বিছানো হচ্ছে। তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে পোড়ামাটি ইটের খোয়াও।
সরেজমিনে নাটোরের গুরুদাসপুর-নাজিরপুর সড়কের ১১ কিলোমিটার জুড়ে চলা সড়ক সংস্কারে এমন নিম্নমানের কাজ দেখতে পাওয়া যায়। প্রতি কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে ৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও এমন নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া কাজের ধীরগতিতে কবে নাগাদ সংস্কার কাজ শেষ হবে সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে।
সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গুরুদাসপুরের নাজিরপুর বটতলা থেকে শুরু হয়ে নাড়িবাড়ি মোড় পর্যন্ত মোট ১১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করছে নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৩৩ কোটি টাকা। আর সড়কটি সংস্কার কাজ করছে নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরকার কন্সট্রাকশন। এই সড়ক সংস্কারে এক কিলোমিটার সড়কে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। আর কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালের জুন মাসে।
গত বুধবার ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পুরোনো ইটগুলো তোলা হয়েছে অনেক আগেই। সেই ইট দিয়ে খোয়া তৈরি করে আবার সড়কেই বিছানো হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে মানহীন পোড়া মাটির ইটের খোয়া। নিম্নমানের সে সব ইট আবার রাখা হয়েছে সড়কে পাশেই।
স্থানীয় হামলাইকোল গ্রামের বাসিন্দা আজগর আলী বলেন, সেপ্টেম্বরের শুরুতে এই সড়ক সংস্কারে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। পুরোনো এই সড়কের খোয়া তুলে রাখা হয় বেশ কিছুদিন। এতে দুর্ভোগ বাড়ে পথচারীদের। এখন আবার নিম্নমানের খোয়া বিছিয়ে রাতারাতি রোলার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কাজের শুরু থেকেই হামলাইকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠটি দখল করে নিম্নমানের খোয়া, বালি ও পোড়ামাটি ইটের স্তূপ করে রাখে ঠিকাদার। সড়কটি সংস্কারে নিয়ম মানা হচ্ছে না। কিছু জায়গায় সড়কের পার্শ্ব ধসে গেলেও তা ঠিক না করে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে।
হামলাইকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শাহনাজ রীতা জানান, তাদের চোখের সামনেই নিম্নমানের ইটের খোয়া তৈরি করে সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। মানহীন এই নির্মাণ কাজের ফলে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া তার বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণ সমগ্রী রাখায় খেলাধুলাসহ শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরকার কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী সুজিত সরকার নিম্নমানের কাজের কথা স্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, দুই ট্রাক খোয়া নিম্নমানের ছিল। পরে তা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে এখন কোনো নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে না।
কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসএই) মজনু মিয়া বলেন, নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করার সময় বাধা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভালো খোয়া দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী এএইচএম জাবেদ হোসেন তালুকদার নিম্নমানের কাজের কথা স্বীকার করে জানান, স্থানীয়দের অভিযোগ পাওয়ার পর এসওকে পাঠানো হয়েছিল। পরে নিম্নমানের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভালো খোয়া না দিলে ঠিকাদারকে কাজ করতে দেওয়া হবে না। তাছাড়া বৃহস্পতিবার আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেব।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড