ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় এক ছাত্রলীগ নেতার হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ মো. তোয়াহা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাণীশংকৈল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে পরিবার ও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
আলহাজ মো. তোয়াহা পৌর শহরের ভান্ডারা (কলেজ পাড়া) গ্রামের মৃত ইয়াসিন আলীর ছেলে। তিনি জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশির ভাগিনা।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তোয়াহা বলেন, পৌর শহরের মহলবাড়ী ঈদগাহ পাড়ার বাসিন্দা মৃত মাবকুদ বক্সের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সাদিদ আমার পারিবারিক আত্মীয়। তাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বিরোধ না থাকলেও তারা বাবা-ছেলে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে আমার ও আমার ছেলেদের সঙ্গে গোলযোগ করার চেষ্টা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে বন্দর বাস স্ট্যান্ডের আমার নিজস্ব জমিতে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের কাজ তদারকি করছিল আমার বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩০)। সেখানে সরকারি জায়গার ওপর ইট রাখা হয়েছিল নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের।
সে সময় হঠাৎ করে ছাত্রলীগ নেতা সাদিদ এসে আমার ছেলেকে গালমন্দ করে এবং তোর বিল্ডিংয়ের ইট এখানে কেন রেখেছিস বলে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক সময় আমি নিজেই সেখানে পৌঁছে আমার ছেলেকে নিয়ে চলে আসতে চেষ্টা করি। এ সময় পেছন থেকে ছাত্রলীগ নেতা সাদিদ আমার ছেলের দিকে পিস্তল তাক করে গুলি করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পিস্তল চালাতে ব্যর্থ হয় সে। কিন্তু পিস্তলের পেছনের অংশ দিয়ে সজোরে আঘাত করে আমার ছেলের মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ সময় তোয়াহাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগ নেতা। সে সময় আশপাশের লোকজন আমাকে ও আমার ছেলেকে উদ্ধার করে রাণীশংকৈল হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে আমার ছেলে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তোয়াহা আরও বলেন, শুধু মাথা ফাটিয়েই ক্ষান্ত হননি সাদিদ ও তার বাবা রফিকুল। পরে সে হাসপাতালে এসে বিভিন্নভাবে গালমন্দ করে এবং জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
তোয়াহা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলার উন্নয়নের স্বার্থে আমি রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ, মহিলা কলেজ ও শ্মশান ঘাটে রাস্তা তৈরিতে জমি দান করেছি। অথচ আমার মতো লোকের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমি ঘটনার দিন রক্তাক্ত অবস্থায় আমার ছেলেকে নিয়ে থানায় যায়। থানা পুলিশ আমাকে আগে চিকিৎসা নিতে বললেও তারা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর অপরাধে ঘটনাস্থলে তদন্তে যাইনি। পড়ে আমি শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খায়রুল আনাম ডন আমার অভিযোগটি থেকে পিস্তলের ব্যবহার কথাটি বাদ দিয়ে অভিযোগ দিলে তিনি মামলা নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, অফিসার ইনচার্জ বর্তমানে ছুটিতে থাকায় আমি এমন অভিযোগের মামলা নিতে পারব না। তোয়াহা বলেন, পুলিশের গড়িমসিতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এই ছাত্রলীগ নেতার হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ওঠা এই ছাত্রলীগ নেতা সাদিদ উপজেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তবে বর্তমানে রাণীশংকৈল ডিগ্রী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন বলে সাদিদ নিজেই জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর ছাত্রলীগ নেতা সাদিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পিস্তলের কথা অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরেই আমাকে ফাঁসানোর জন্যই এ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খায়রুল আনাম ডন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এই ছাত্রলীগ নেতা সাদিদ ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ বর্তমান পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আলেকজেন্ডারকে পৌর শহরের মুক্তা মার্কেট চত্বরে রাজনৈতিক কলহের জেরে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে থানায় একটি মামলা চলমান রয়েছে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড