লামা প্রতিনিধি, বান্দরবান
মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে বান্দরবানের লামা উপজেলায় আরও একটি বুনো হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ওই হাতিটির বয়স আনুমানিক আড়াই থেকে তিন বছর হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী এলাকার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার চাককাটার ঝিরিতে হাতিটিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি মৎস্য প্রকল্পের পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি বাচ্চা হাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ দিকে, পূর্বের মতো এবারও স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, রোগাক্রান্ত হয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। আবার কেউ বলছেন বিদ্যুতের ফাঁদে পড়ে মারা গেছে হাতিটি। এভাবে একের পর এক হাতির মৃত্যু নিয়ে সর্ব মহলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে কুমারী চাককাটার ঝিরিতে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ দেখে অধিবাসীরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আলমগীর চৌধুরী ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ দিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন অধিবাসী জানান, বিভিন্ন সময় গভীর জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে হাতির পাল ওই এলাকায় হানা দিয়ে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, মানুষ ও বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। এ থেকে রক্ষা পেতে বাগান ও ফসলি জমির চারপাশে প্রায় সময় বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে বুনো হাতির পাল খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নামলে বাচ্চা হাতিটি পাতানো ওই বিদ্যুতের তারের সঙ্গে জড়িয়ে মারা যায়।
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকার অধিবাসীরা জানান, সম্ভবত হাতির বাচ্চাটি রোগাক্রান্ত ছিল। তাই তার মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া সেখানে কখনো বিদ্যুতের ফাঁদ পাতানো হয়নি বলেও জানান তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার জানান, মৃত হাতিটির শুঁড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে মৃত হাতিটির প্রাথমিক সুরতহাল ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হবে। এ সময় তিনি বলেন, ময়না তদন্তের পর জানা যাবে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে না কি এটি স্বাভাবিক মৃত্যু।
বুনো হাতির মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান দৈনিক অধিকারকে জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বন্য হাতির মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে একই এলাকার রহমত উল্যাহর রাবার বাগানে একটি, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে গজালিয়া ইউনিয়নের হাইমারা ঝিরিতে একটি, ইয়াংছা এলাকার সেলিমুল হক চৌধুরীর বাগানে ২০০৪ সালে একটি এবং সর্বশেষ গত ৬ নভেম্বর আরও একটিসহ মোট পাঁচটি বুনো হাতির মৃতদেহ পাওয়া যায়।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড