• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুহূর্তেই বিচ্ছিন্ন ফারজানার দুই পা

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

১২ নভেম্বর ২০১৯, ২১:০৬
ট্রেন দুর্ঘটনা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনা (ছবি : সংগৃহীত)

সিলেটে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বেড়ানো শেষে নিজ বাড়ির উদ্দেশে ট্রেনে উঠেছিল ফারজানা আক্তার। উদ্দেশ্য বাড়িতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করা। ছুটে চলা ট্রেনটিও যেন ব্যস্ত তাকে বাড়িতে পৌঁছাতে। রাতের আঁধারে ঝিক ঝিক শব্দে জ্যোৎস্নামাখা পরিবেশে রেললাইন ধরে ছুটে চলছিল ট্রেনটি। এমন সময় হঠাৎ বিকট শব্দে দুইটি টেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আন্তঃনগর ‘তূর্ণা নিশীথা’ ও আন্তঃনগর ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের মুখোমুখি এ সংঘর্ষেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হলো ফারজানা আক্তারকে।

নিহত ফারজানা আক্তার চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তর বালিয়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেন ব্যাপারির মেয়ে।

ফারজানার লাশ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তার বাড়িতে নিয়ে আসা হলে ওই এলাকায় নেমে আসে শোকের মাতম।

জানা যায়, সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেন ব্যাপারির পরিবারের সদস্যরা গত ৭ নভেম্বর শিশু-কিশোরসহ মোট সাতজন সিলেটে ফারজানা আক্তারের খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়। এ দিকে, মঙ্গলবার বাগাদী ইউনিয়নের বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করার শেষ দিন ছিল। নিহত ফারজানা ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় ফরম ফিলাপের উদ্দেশ্যে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে তারা সকলেই ট্রেনযোগে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।

কিন্তু পথিমধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেল স্টেশনে ‘তূর্ণা নিশীথা’ ও আন্তঃনগর ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ফারজানা আক্তারের দুইটি পা শরীর থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ফারজানা ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। অপরদিকে, একই দুর্ঘটনায় আহত হয়- বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী বেবী বেগম (৪৫), শাশুড়ি ফিরোজা বেগম (৬৫), মেয়ে সুমি আক্তার (২০), শিশু ইলরিন (৫) ও তিন বছরের শিশু জুবায়েদ।

এ দুর্ঘটনায় নিহত ফারজানা আক্তার প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের ছোট মেয়ে। এছাড়া সরেজমিনে বালিয়া ইউনিয়নের তালুকদার বাড়িতে গেলে ফারজানার বড় ভাই হাসান জানান, আহত মিতু আক্তার (২৫) ও শাহিদা বেগম (৪০) এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

এ দিকে, বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারজানার মৃত্যুর খবরে সহপাঠীরা ফারজানার বাড়িতে ছুটে আসে। এতে মুহূর্তেই থমথমে হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ। সহপাঠীর চলে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়ে তারা।

ফারজানার কয়েকজন সহপাঠী জানায়, ‘মঙ্গলবার আমাদের ২০২০ সালের এসএসসির ফরম ফিলাপের শেষ দিন ছিল। এ জন্য ফারজানা সিলেট থেকে তার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সোমবার রাতেই বাড়ির উদ্দেশে রওযানা হয়। পথিমধ্যে কসবা এলাকায় তাকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হলো। ফারজানার এমন অকাল মৃত্যুতে বাগাদী গণি উচ্চ বিদ্যালয় একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ও আমরা একজন বন্ধুকে হারিয়েছি। এ শোক ভুলে যাওয়ার নয়।’

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড