পাবনা প্রতিনিধি
পাবনার ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামের একটি অবৈধ ক্লিনিক সিলগালা ও ক্লিনিক মালিককে জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত জুলাই মাসে এ ঘটনার পর তারা গোপনে সিলগালা ভেঙে আবারও ওই ক্লিনিকে অপারেশন শুরু করেন।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌর শহরের নারিকেলপাড়া মহল্লার এ ক্লিনিকে তাছলিমা খাতুন (৩৫) নামের এক প্রসূতি মারা যান। তিনি উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী।
এ ঘটনার পর পালানোর সময় সাদ্দাম হোসেন নীরব নামে কথিত সার্জন ও তার সহযোগী আসাদুজ্জামানকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
আটক কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। তবে ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু পলাতক রয়েছেন।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বায়েজীদ-উল ইসলাম মারা যাওয়া ওই প্রসূতির স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, অপারেশন টেবিলে মৃত প্রায় প্রসূতিকে সেলাই না করে তাকে ফেলে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে রোগীর স্বজনরা তাকে ও তার সহযোগী আসাদুজ্জামানকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
পরে তাছলিমাকে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, সোমবার তাছলিমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য স্বজনরা তাকে পৌর শহরের নারিকেলপাড়া ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন নীরব, ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু, আসাদুজ্জামান এবং দুজন নার্স মিলে অস্ত্রোপচার করেন এবং একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।
এ সময় রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে অবস্থা বেগতিক দেখে কথিত সার্জন, তার সহকারী এবং ক্লিনিক মালিক পালানোর সময় কথিত সার্জনকে আটক করতে পারলেও পালিয়ে যান ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু। এ দিকে পুরো অপারেশন থিয়েটার জুড়ে রক্তে ভেসে যায়। এ ঘটনার পর রোগীর স্বজন এবং স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বায়েজীদ-উল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ওই ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগীকে সেলাই না করেই সবাই পালায়। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে (তাছলিমা) পাবনা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, সাদ্দাম হোসেন এবং তার সহকারী আসাদুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ জুলাই ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামের এই ক্লিনিকেই এনেস্থেসিয়া (অজ্ঞানকারী) চিকিৎসক ছাড়া রোগীর অস্ত্রোপচার এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অস্ত্রোপচারের কারণে কথিত ওই সার্জন এবং ক্লিনিক মালিককে জরিমানা করেন এসিল্যান্ড ইকতেখারুল ইসলাম। এছাড়া ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
তবে কাউকে না জানিয়ে সিলগালা ভেঙে আবারও ওই ক্লিনিকে অপারেশন শুরু করে কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন এবং ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড