নিখোঁজের ২৬ দিন পর কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার

নিখোঁজের ২৬ দিন পর যশোরে মাটি খুঁড়ে পল্লব (২০) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পল্লবের দুই বন্ধুকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এই লাশের তথ্য জানতে পারে পুলিশ।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার জঙ্গলবাঁধাল গ্রাম থেকে ওই গ্রামের একটি কাঁচা ঘরের মধ্যে মাটি খুঁড়ে ওই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত পল্লব সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের বিকাশের ছেলে।

যশোর কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, গত অক্টোবরের ১৪ তারিখ নিখোঁজ হন কলেজছাত্র পল্লব। তিনি যশোর সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ঘটনায় কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল।

পুলিশ জানায়, শনিবার সকালের দিকে পল্লবের দুই বন্ধু জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে অপূর্ব এবং জগন্নাথপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ঈশানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সঞ্জিব কুমার মণ্ডল। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে অপূর্ব স্বীকার করে, পল্লবকে হত্যা করে তার নানা আজিজার রহমান মাস্টারের জঙ্গলবাঁধালস্থ বাড়ির দক্ষিণ পাশের একটি কাঁচা ঘরের মধ্যে গর্ত খুঁড়ে সেখানেই পুঁতে রাখা হয়েছে।

তথ্য পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল (ক) গোলাম রাব্বানি, কোতয়ালি থানায় ওসি মনিরুজ্জামানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে যান। পুলিশ দুই বন্ধুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই ঘরের মধ্যে মাটি খুঁড়ে পল্লবের মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অপূর্বের নানা আজিজুর রহমান মাস্টার ও নানি সাবিহা খাতুনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ দিকে পল্লব হত্যা সম্পর্কে এলাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে পল্লব একটি মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলবাঁধাল গ্রামে বন্ধু অপূর্ব বাড়িতে যায়। অপূর্ব তার নানার বাড়িতে থাকে। ওই মেয়ের সঙ্গে রাত কাটাবে বলে পল্লব প্রস্তাব দিলে অপূর্ব তাদের থাকার সুযোগ করে দেয়। ঘটনার দিন অপূর্বর নানা ও নানি বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি অপূর্ব ছাড়াও তার অপর বন্ধু ঈশান জানত।

তারা ওই রাতে পল্লব ও তার বান্ধবীর অসামাজিক কাজের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। এরপর ওই দৃশ্য ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অপূর্ব ও ঈশান ওই মেয়েকে চায়। এই নিয়ে পল্লবের সঙ্গে তাদের বাক-বিতণ্ডা হয়। পল্লব বাঁধা দেওয়ায় অপূর্ব একটি ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে পল্লব মারাত্মক আহত হন এবং মারা যান। পরে তারা দুইজনে পল্লবের মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে ওই ঘরের মধ্যে মাটি খুঁড়ে সেখানেই পুঁতে রাখে। আর ওই মেয়েকে চলে যেতে সহযোগিতা করে। তবে মেয়েটির পরিচয় জানা যায়নি।

যশোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি হত্যার পর পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওডি/ এফইউ