সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে সাতক্ষীরায় দিনভর ছিল বৃষ্টির সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। পুলিশ, বিজিবি, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে গঠিত টিম শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত উপকূলবর্তী মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। এদিকে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।
শনিবার সকালে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পর জেলা প্রশাসনের আপ্রাণ চেষ্টায় সাধারণ মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে আনা হচ্ছে। যদিও দুর্যোগ সতর্কতা সংকেত জারি ও মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হলেও প্রথমে সাধারণ মানুষ ততটা সাড়া দেয়নি।
এদিকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকেই সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে নেওয়ার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
উপকূলীয় এলাকায় অনবরত চলছে মাইকিং। প্রতিটি এলাকায়ই তোলা হয়েছে সতর্কতামূলক ফ্লাগ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল সার্বিক পরিস্থিতি তদারকির মাধ্যমে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের মানুষকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে বহনের জন্য চারটি বাস ও অন্যান্য যানবাহন নিয়োজিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএস মোস্তফা কামাল জানান, ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জানমালের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর ১শ সদস্যের একটি টিম উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার ২৭০টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১ লাখ ২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তায় ৩১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২৭ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র মজুদ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী তিনস্তরের প্রশিক্ষিত ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকসহ ৮৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, শিশুদের জন্য ১ লাখ টাকা ও গবাদি পশুর জন্য আরও ১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন নদী ও খালে থাকা নৌযানগুলিকে উপকূলবর্তী নিরাপদ স্থলে আনা হয়েছে। হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিক সার্বক্ষণিক খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরার দুটি বিভাগের আওতায় ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে ৭ ফুট উচ্চতার যে জলোচ্ছ্বাসে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা হলে এসব বেড়িবাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের উপ-পরিচালক জুলফিকার অলী জানান, দুপুর পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড