বরিশাল প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল থেকে রক্ষা পেতে বরিশালের অধিকাংশ মানুষই আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো পৌঁছায়নি। ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা সত্ত্বেও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ নেই অনেকের। এ অবস্থায় দুর্যোগপ্রবণ এলাকার লোকজনদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনসহ স্বেচ্ছাসেবকদের।
জেলার ১০ উপজেলায় নদী তীরবর্তী চর এলাকা থাকলেও সেখানকার তুলননামূলক কম মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, জেলার ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টারে শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকাল নাগাদ ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর করে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ মেঘনা নদী ঘেরা মেহেন্দীগঞ্জে ৪৫টি আশ্রায় কেন্দ্রে বিকাল পর্যন্ত ৭ হাজার ৬শ মানুষ অবস্থান করছেন। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় চরবাসী আছেন কম পক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার। ঝুঁকি নিয়ে এসব মানুষ এখনো বসবাস করছেন।
মেঘনা সংলগ্ন হিজলা উপজেলায় ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষের যাওয়ার জন্য আগ্রহ নেই বলে জানা গেছে। বাবুগঞ্জ উপজেলায় ২৮টি সাইক্লোন শেল্টারে ২৪শ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানান, বাবুগঞ্জে দেড় লাখ লোকের বসবাস। সেই তুলনায় খুবই কম মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে। তারা ভাবছে যে কিছু হবে না।
এ দিকে মুলাদীতে ১৫টি কেন্দ্রে তেমন লোকজন যায়নি। ব্যাপক প্রচার করা হলেও আশ্রয় কেন্দ্রগুলো অনেকটা শূন্য। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, মালামাল রেখে যেতে চায় না। একই অবস্থা সদর উপজেলা, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জে।
তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও সিপিপির কর্মীরা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলাচ্ছেন। চলছে বিরামহীন মাইকিং। শনিবার বিকাল থেকে বৃষ্টির পাশাপাশি বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। কীর্তনখোলাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় বিভাগীয় কমিশনার মো. ইয়ামিন চৌধুরী শনিবার দুপুরে সার্কিট হাউজে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, বরিশাল বিভাগে ২ হাজার ১১৪টি সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। যেখানে ১৭ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। মানুষের জীবনরক্ষার জন্যই তাদের জোর করে সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে। কারণ উপকূলীয় বেশকিছু এলাকার মানুষ তাদের মালপত্র ছেড়ে সাইক্লোন শেল্টারে যেতে অনিহা প্রকাশ করেন।
দুর্যোগ মোকাবিলায় শনিবার এক সভায় সিটি কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। চোখের সামনে কোনো দুর্যোগ দেখলে কারও নির্দেশনার অপেক্ষা এবং অর্থের জন্য অপেক্ষা করা যাবে না।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, শনিবার বিকাল পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ জেলার ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, আনসার ও সিপিপির কর্মীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১০ হাজার কর্মী অধিক ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড