চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এবং নিচু এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে মাইকিং করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন।
শনিবার (৯ নভেম্বর) ভোর থেকে নগরীর বন্দর-ইপিজেড, পতেঙ্গা, হালিশহর, ফিরিঙ্গি বাজার, পাথরঘাটা ও কাট্টলী, সীতাকুণ্ডুর উপকূলীয় এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারীদের সরাতে মাইকিং কার্যক্রম এবং স্বেচ্ছাসেবক টিম, রেড ক্রিসেন্ট এবং এনজিওর দুর্যোগ কমিটির সদস্যরাও কাজ করছেন।
উত্তর পতেঙ্গা ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, যেহেতু আমার এলাকা চট্টগ্রাম স্থলবন্দর এবং বিমানবন্দর উভয়ের মাঝখানে সেহেতু ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা তো রয়েছে। তাই শুক্রবার (৮ নভেম্বর) থেকেই সচেতনতামূলক মাইকিংসহ নানাবিধ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি আমরা।
৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জিয়াউল হক সুমন বলেন, আমরা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এলাকার মানুষ। তাই আমাদের পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয়। ইতোমধ্যে লোকজনকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে এ রকম ৯টি ওয়ার্ডে মাইকিং প্রচার ও স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার লোকজন যাতে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারে সেজন্য পরিবহন পুলের ৪০টি গাড়ি পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় চসিকের পক্ষ থেকে পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, সাতটি মেডিকেল টিম গঠন এবং চারটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আঘাতের পর গাছপালা ভেঙে পড়লে রাস্তা থেকে তা দ্রুত সরাতে আধুনিক যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিটি মেয়রের নির্দেশে চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (ফোন নম্বর: ০৩১-৬৩৩৬৪৯, ০৩১-৬৩০৭৩৯) খুলেছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এ দিকে শনিবার সকাল থেকেই পতেঙ্গা ও কাট্টলী-সীতাকুণ্ডু সমুদ্র সৈকতে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সাগর পাড় থেকে সরাতে টুরিস্ট পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সদস্য প্রস্তুত থাকতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (এডিসি-রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সকাল থেকে চান্দগাঁও, বাকলিয়া, সদর, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) নিজ নিজ সার্কেলের পাহাড় থেকে লোকজনকে সরাতে মাইকিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লোকজন যাতে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এসে নিরাপদে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (ফোন নম্বর: ০৩১-৬১১৫৪৫, ০১৭০০-৭১৬৬৯১) যোগাযোগের অনুরোধ জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে হালকা বাতাসসহ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ কিছুটা গোমট ও মেঘলা থাকতে পারে। সাগরের স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বৃদ্ধি পাবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড