পাসপোর্ট করতে এসে ধরা খেল রোহিঙ্গা নারী

ভুয়া জন্ম সনদ ও পরিচয়পত্র নিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পাসপোর্ট করতে আসা এক রোহিঙ্গা নারীকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃত নারীর ছদ্মনাম শাহিদা আক্তার। তিনি মিয়ানমারে সুখতারা নামে পরিচিত। জাজিরা উপজেলার পালেরচর (মহন ফকিরের কান্দি) গ্রামের বাবুল ফকিরের স্ত্রী পরিচয়ে তিনি পাসপোর্ট করতে এসেছিলেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরের দিকে পাসপোর্ট ফরম জমা দেওয়ার সময় কাউন্টার থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও এনএসআই কর্তৃক আটককৃত ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ তাকে পালং মডেল থানায় সোপর্দ করেছেন।

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানা যায়, বুধবার সকাল ১১টার দিকে বাবুল ফকির ও তার স্ত্রী পরিচয়ে শাহিদা আক্তার দুইটি পাসপোর্টের পরিপূর্ণ ফরম নিয়ে জমা কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ায়। প্রথমে শাহিদার স্বামী পরিচয়ে বাবুল ফকির ফরম জমা দেয়। পরবর্তীতে শাহিদা ফরম জমা করে। এ সময় ফরম জমা কাউন্টারে দায়িত্বরত সহকারী হিসাব রক্ষক সালেহ আহমেদ শাহিদার জবানবন্দি গ্রহণকালে স্বামী ও গ্রামের নাম ছাড়া বাংলায় অন্যকিছু বলতে পারে না। পরে সন্দেহজনকভাবে শাহিদাকে আটক করা হয়। এ সময় কৌশলে শাহিদার স্বামী পরিচয়ে আসা বাবুল ফকির ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

শাহিদার পূরণকৃত পাসপোর্ট ফরম থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালের চর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ ও পরিচয়পত্র নিয়েছেন। পালের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান নিবন্ধক হিসেবে শাহিদার জন্ম সনদ ও পরিচয়পত্রের নিচে নিজের নাম ও সীলমোহরসহ স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়া পাসপোর্ট ফরম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়িত করেছেন পূর্ব নাওডোবা আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাহাদ হোসেন সৌম্য।

এ দিকে, আটককৃত রোহিঙ্গা নারী জানায়, বাবুল ফকিরের সঙ্গে তার চট্টগ্রামে পরিচয় হয়। সে ওই নারীকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে শরীয়তপুর নিয়ে আসে। এরপর সকল কাগজপত্র বাবুল ফকির প্রস্তুত করে তার স্ত্রী পরিচয়ে শাহিদাকে পাসপোর্ট করার জন্য পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে আসে।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শেখ মাহাবুর রহমান বলেন, বুধবার এক নারী পাসপোর্ট করার জন্য অফিসে এসে ফরম জমা দেয়। এ সময় আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। সে শেখানো কয়েকটি বাংলা ভাষা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি। পরে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে স্বামী পরিচয়ে আসা বাবুল ফকির নামে ওই ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীকালে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় ওই নারী রোহিঙ্গা নাগরিক বলে স্বীকার করে। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গা নারী আটকের সত্যতা স্বীকার করে পালং মডেল থানার উপপরিদর্শক রবিউল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, পাসপোর্ট করতে এসে পাসপোর্ট অফিসে এক রোহিঙ্গা নারী আটক হয়। পরে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় আটককৃত ওই রোহিঙ্গা নারীর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ওডি/আইএইচএন