মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমড়াখালি এলাকার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে মেহেদী হাসান মোল্লা (৪০) নামের মসজিদের ইমাম কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছেন।
ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে মসজিদের ইমামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। থানায় মামলা হলে বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে ধর্ষক ইমামকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। স্কুল ছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার রায়েন্দা থানার রাজাপুর গ্রামের আ. জব্বার মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান মোল্লা ১২ বছর ধরে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমড়াখালি এলাকার জবান খাঁন জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে চাকরি করতেন।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে যাওয়ার আগে প্রতিদিন সকালে এলাকার অন্য শিশুদের সঙ্গে সে গ্রামের মসজিদে ইমামের কাছে আরবি পড়তে যায়। গত ১২ অক্টোবর ২০১৯ তারিখ সকালে অন্য শিশুদের সঙ্গে মেয়েটিও আরবি পড়তে যায়। পড়া শেষে সবাইকে ছুটি দিলেও মেয়েটিকে তার (ইমামের) থাকার কক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে ইমাম মেহেদী হাসান তার কক্ষে নিয়ে যায়।
পরে কক্ষের দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক ইমাম তাকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি চিৎকার করতে থাকলে তার মুখে কাপড় দিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর গত ১৫ অক্টোবর একইভাবে তাকে আবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ধর্ষণের কথা কারো কাছে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে ঐ ইমাম মেয়েটিকে শাসিয়ে দেয়। পরে মেয়েটি কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘটনাটি চেপে রাখেন।
গত মঙ্গলবার ৫ নভেম্বর দুপুরে মেয়েটি তার স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শিক্ষকেরা তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা স্কুলে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে মেয়েটির কাছে তার পরিবারের লোকজন সব কিছু জানতে চায়। সন্ধ্যার দিকে মেয়েটি তার নানীর কাছে সব খুলে বলে।
পরে এ ঘটনার কথা এলাকার লোকজন জানতে পেরে ইমাম মেহেদি হাসান মোল্লাকে আটক করে। পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ইমাম মেহেদি হাসানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। বুধবার সকালে ঐ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেদি হাসানকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। স্কুল ছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিতার পিতা বলেন, ইমাম মেহেদি হাসানকে এলাকাবাসী আটক করে চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে তার মেয়েটিসহ ইমামকে থানায় নিয়ে গেছে। আমি মামলা করেছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক আবুল কালাম বলেন, রাত ৯ টার দিকে এলাকাবাসী আমাদের ঘটনাটি জানালে আমরা সেখান থেকে মেহেদী হাসান নামে একজনকে থানায় নিয়ে আসি।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শশাংক চন্দ্র ঘোষ বলেন, একটি মেয়ে রাতে ধর্ষণের অভিযোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা মেডিকেল চেকআপের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি সওগাতুল আলম জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। মামলার আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য আমরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি।
ওডি/আরবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড