মুসফিকুর রহমান, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোছা. রুপিয়া খাতুন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ৭৭ পেরিয়েছে তার বয়স। স্বামী মারা গেছেন প্রায় ২৫ বছর আগে, তার দুই ছেলেও মারা গেছে এক যুগেরও বেশি সময় আগে। চোখে দেখতে পান না প্রায় দেড় যুগ আর কানে শোনে না ১৫ বছরেরও অধিক। কিন্তু এতোগুলো সমস্যাও একটা ভাতার কার্ড দেওয়ার জন্য যথেষ্ট মনে করেননি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাই আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও অসহায় জীবনযাপন করছেন তিনি।
রুপিয়া খাতুন এখন ঠিকঠাক হাঁটতেও পারেন না। ভুগছেন বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে। তিনি থাকেন মৃত ছেলেদের বউ ও নাতীদের সঙ্গে। নাতীরা চাষাবাদ করে সংসার চালান। কোনো রকমে দিন চলে তাদের। তার ওপর এ আয়ে দাদির জন্য ওষুধ কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে তাদের।
রুপিয়া খাতুনের নাতী মো. জয়নাল আবেদিন বলেন, দাদির অনেক বয়স হয়েছে। সবসময়ই নানা রকম রোগ-শোকে ভোগেন। তার জন্য ওষুধ কেনা লাগে। আবার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছু খেতে চান কিন্তু অর্থাভাবে সব সময় কিনে দিতে পারি না এজন্য খুব খারাপ লাগে। তার যদি একটা ভাতার কার্ড থাকতো তাহলে অন্তত তার ওষুধ কেনাসহ বিভিন্ন চাওয়া পূরণ করতে পারতাম।
রুপিয়া খাতুনের পুত্রবধূ রাহিলা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর হলো আমার শ্বশুর মারা গেছেন। কিন্তু আমার শাশুড়ি একটা বিধবা ভাতার কার্ড পাননি। শাশুড়ি কানে শোনেন না, চোখেও দেখতে পান না দীর্ঘদিন তবুও কোনো কার্ড তার হয়নি।
কেন তিনি কোনো ভাতার কার্ড পান না? আপনারা কি কার্ডের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কখনো যোগাযোগ করেননি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় রাজনীতি, দলাদলির কারণে এতদিন তিনি কার্ড পাননি। আমরা আগেও যোগাযোগ করেছি। ছবি চেয়েছিল ছবি দিয়েছিলাম কিন্তু মেম্বর-চেয়ারম্যান কার্ড দেননি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি দায়সারা বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আসলে এতদিন উনার আইডি কার্ড আমরা হাতে পায়নি। তাই ভাতার কার্ড করে দিতে পারেনি। মূলত তার আইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছিল এজন্য সমস্যা হয়েছিল। তবে নতুন করে সে স্মার্ট কার্ড পেয়েছে এবং আমি তার স্মার্ট কার্ডের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছি।
এ ব্যাপারে কেড়াগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, সম্প্রতি আমি তার আইডি কার্ডের কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়েছি। এবার নতুন কার্ড আসলেই তার কার্ড হয়ে যাবে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড