মাকে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে মেয়ে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় চাঁনতারা বেগম (৪৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। মায়ের ওপর ‘বিরক্ত’ হয়ে মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৬) বটি দিয়ে মাকে গলা কেটে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গতকাল রোববার (৩ নভেম্বর) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তানিয়া। গত শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে বিরামপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চাঁনতারার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। তিনি জেলার নবীনগর উপজেলার সেমন্তঘর এলাকার মো. খলিল মিয়ার স্ত্রী। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় চাঁনতারা নিজেই বটি দিয়ে তার গলা কাটেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিল তানিয়া।

এ ঘটনায় চাঁনতারা বেগমের ভাই মো. জাকির হোসেন (৩৮) সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

এসপি মোহাম্মদ আনিুসর রহমান সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, বসবাসের জায়গা না থাকায় খলিল মিয়া তার স্ত্রী চাঁনতারা ও তিন সন্তান নিয়ে বিরামপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার একটি পুকুরপাড়ে বসবাস করতেন। ভিক্ষা করে খলিল মিয়া জীবিকা নির্বাহ করেন। হাসান (১৪) নামের খলিল চাঁনতারার দ্বিতীয় সন্তান গত দুই বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছে। সেই কারণে ছেলের জন্য মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন চাঁনতারা।

তানিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা উল্লেখ করে এসপি জানান, গত শনিবার (২ নভেম্বর) ভোরে খলিল মিয়া ফজর নামাজ আদায় করতে মসজিদে যান। এ সময় চাঁনতারা বাড়ির বাইরে চলে যেতে চাইলে তানিয়া তাকে ঘরে এসে ঘুমানোর জন্য বলে। কিন্তু চাঁনতারা না ঘুমিয়ে বটি এনে তানিয়াকে বলেন ‘নে আমারে মাইরালা’। তখন তানিয়া রেগে গিয়ে ওই বটি দিয়ে মায়ের গলায় টান দেয়। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে চাঁনতারা মারা যান। এরপর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তানিয়া।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, বিশেষ শাখার (এসবি) ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহম্মেদ, সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ওডি/ এফইউ