ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
২০০৪ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় জাকির হোসেন ও ময়না খাতুনের। বিয়ের পর ভালোই চলছিল ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের গৃহবধূর ময়না খাতুনের সংসার। কিন্তু হঠাৎ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন স্বামী জাকির হোসেন। এরপরই শুরু হয় ময়নার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
প্রথমে নীরবে সহ্য করে পিত্রালয়ে কিছুই জানাননি গৃহবধূ ময়না। কিন্তু বিগত এক বছর ধরে সেই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে বিচার প্রার্থনা করলে গ্রাম্য সালিশে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয় জাকির হোসেন ও তার পরিবারের লোকজনকে। এরপরও থামেনি স্বামী জাকির হোসেন।
মাদকের পাশাপাশি এবার দিনাজপুরের সুরভী নামের একটি মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে গোপনে বিয়েও করে জাকির। স্ত্রী ময়না স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহের কথা শুনে তার প্রতিবাদ করায় সেটি তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত স্বামীর পরিবারের লোকজন পিটিয়ে হত্যার পর তার লাশ ফেলে গেছে হাসপাতালে।
হরিপুর থানার সামনে শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের আদরের ছোট বোনকে হত্যার এমন লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন ময়না খাতুনের (৩০) বড় ভাই আশরাফ আলী। নিহত গৃহবধূ ময়না খাতুন পীরগঞ্জ উপজেলার আব্দুল কাদেরের মেয়ে।
তিনি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার আমবাড়ী গ্রামে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে ময়না খাতুনের ওপর শুক্রবার রাতভর কয়েক দফায় চলে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতন। অপরাধ একটাই স্বামীর দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়া। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে ভোরবেলা গৃহবধূর সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে স্বামীর পরিবারের লোকজন তাকে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে ডাক্তার গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করলে লাশ ফেলে দ্রুত সটকে পড়েন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।
হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার মাসুদ রানা জানান, সকালে গৃহবধূকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুর খবর শুনেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুজ্জামান দৈনিক অধিকারকে জানান, গৃহবধূর বড় ভাই বাদী হয়ে তার স্বামী জাকির হোসেন ও তার বাবা জয়নাল আবেদীনসহ সাতজনকে আসামি করে শুক্রবার সকাল ১১টার সময় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে বিকালে ঠাকুরগাঁও মর্গে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড