• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার শেষ প্রস্তুতি

  ক্যারিয়ার ডেস্ক

২১ আগস্ট ২০১৯, ১৬:১৬
শিক্ষক নিবন্ধন

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। ছোটবেলা থেকে অনেকেই স্বপ্ন দেখেন তার পছন্দের শিক্ষকের মতো একজন শিক্ষক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার। আর তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে স্কুল ও কলেজের শিক্ষক হওয়া। এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করার ক্ষেত্রে বর্তমানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে। বর্তমানে দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে (স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা) নিবন্ধন ছাড়া চাকরির কোনো সুযোগ নেই।

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধা তালিকার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। আগামী ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। তাই স্কুল-কলেজের শিক্ষকতা করার স্বপ্ন যাদের, তারা বাকিটা সময়কে কাজে লাগিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন নিজ লক্ষ্যে।

পরীক্ষা পদ্ধতি

প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে, সময় থাকবে এক ঘণ্টা। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান অর্থাৎ ৪টি বিষয় থেকে প্রশ্ন হবে। প্রতিটি বিষয় থেকে ২৫টি করে প্রশ্ন থাকবে প্রিলিমিনারিতে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য বরাদ্দ ১ নম্বর এবং প্রত্যেক ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা যাবে। এ পরীক্ষায় পাস করতে হলে ৪০ নম্বর পেতে হবে।

এরপর ঐচ্ছিক বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সময় থাকবে ৩ ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষাতেও পাস নম্বর ৪০। উত্তীর্ণ হলেই শিক্ষক নিবন্ধন সনদ মিলবে।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার সময় এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। নির্ধারিত তারিখে সঙ্গে আনতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। এই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতেই উপজেলা, জেলা ও জাতীয় মেধাতালিকা তৈরি করা হবে।

বাংলা

স্কুল ও কলেজ উভয় পর্যায়েই বাংলা ব্যাকরণ অংশের মধ্যে ভাষারীতি ও বিরাম চিহ্নের ব্যবহার, কারক বিভক্তি, সমাস, প্রত্যয়, সন্ধি বিচ্ছেদ, বাগধারা ও বাগবিধি, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, যথার্থ অনুবাদ, বাক্য সংকোচন, ভুল সংশোধন ও লিঙ্গ পরিবর্তন থেকে প্রশ্ন আসে। ব্যাকরণ ছাড়াও বাংলা সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসে। স্কুল পর্যায়ের জন্য নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক, বোর্ড প্রণীত ব্যাকরণ ও বাংলা প্রথম পত্র বইটি ভালোভাবে পড়তে হবে এবং কলেজ পর্যায়ের জন্য একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড বইটিও দেখতে হবে। প্রথম পত্র বইয়ের প্রতিটি গদ্য ও পদ্যের লেখক পরিচিতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

গণিত

পাটিগণিত অংশের মধ্যে ঐকিক নিয়ম, লাভ-ক্ষতি, শতকরা, সুদকষা, গড়, ল.সা.গু, গ.সা.গু, অনুপাত-সমানুপাত, বীজগণিত অংশের মধ্যে মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা, ফাংশন, উত্পাদক নির্ণয়, বর্গ ও ঘন, সূচক ও লগারিদমের সূত্রের প্রয়োগ এবং জ্যামিতির মধ্যে রেখা, কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত, পরিমিতি ও ত্রিকোণমিতি থেকে প্রশ্ন আসে।

পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতির সাধারণ ধারণা, বিভিন্ন সূত্র, নিয়মাবলি ও এর প্রয়োগ থেকে প্রতি বছরই প্রশ্ন করা হয়। স্কুল পর্যায়ের জন্য ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির গণিত বইয়ের প্রতিটি নিয়মের অঙ্ক সমাধান করতে হবে এবং কলেজ পর্যায়ের জন্য একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বইয়ের সমাধান করতে হবে।

ইংরেজি

ইংরেজিতে বেশির ভাগ প্রশ্নই গ্রামারের ব্যবহার থেকে করা হয়। গ্রামার অংশের মধ্যে আছে আর্টিকেল, পার্টস অব স্পিচ, অ্যাপ্রোপ্রিয়েট প্রিপজিশন, ভার্ব, ভয়েস, ন্যারেশন, ট্রান্সফরমেশন, কারেকশন ইত্যাদি। এছাড়া কমপজিশন অংশের মধ্যে প্যারাগ্রাফ, লেটার, অ্যাপ্লিকেশন, পাংচুয়েশন, ক্রিয়েটিভ রাইটিং ও রচনা। গ্রামার অংশে ভালো করার জন্য বারবার চর্চার সাথে বিগত বছরের প্রশ্নগুলোও সমাধান করতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান

সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবেশ, রোগব্যাধি ও চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশ অংশে রয়েছে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু, ইতিহাস ও সভ্যতা, সংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিভিন্ন সম্পদ; আন্তর্জাতিক অংশ থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা, বিভিন্ন দেশ পরিচিতি, মুদ্রা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ, আন্তর্জাতিক দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, খেলাধুলা; প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, রোগব্যাধি, চিকিৎসা-স্বাস্থ্য ও পরিবেশ এবং সাম্প্রতিক বিষয়ের প্রতি একটু বেশি নজর দিতে হবে। যেমন বিশ্বকাপ ক্রিকেট, পাকিস্তান দলের বাংলাদেশ সফর, এ বছরের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রভৃতি।

প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর

প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকা জিপিও বক্স নম্বর-১০৩, ঢাকা-১০০০ ঠিকানায় পাঠাতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র, স্নাতক (পাস বা সম্মান) পর্যায়ের নম্বরপত্র, নাগরিকত্ব সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ সনদ, সহকারী শিক্ষক পদে আবেদনকারীদের অনলাইনে আবেদনের সময় উল্লিখিত ঐচ্ছিক বিষয়ের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে স্নাতক পর্যায়ের প্রবেশপত্র সকল কিছু লাগবে। খামের ওপর ‘পঞ্চদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার আবেদনপত্র’ লিখতে হবে।

লিখিত পরীক্ষা

সিলেবাস অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বই থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে স্নাতক পর্যায়ের বই থেকেও প্রস্তুতি নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় প্রতিটি প্রশ্নেরই বিকল্প প্রশ্ন থাকে।

নিবন্ধন পরীক্ষায় স্কুল ও কলেজ উভয় পর্যায়ে ভালো করার জন্য ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান বোর্ড বই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর কলেজ পর্যায়ের জন্য একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড বই দখলে রাখতে হবে। অন্যদিকে, সাধারণ জ্ঞানের জন্য আজকের বিশ্ব, নতুন বিশ্ব, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের মতো তথ্যভিত্তিক বইগুলো বেশ উপকারী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড