অধিকার ডেস্ক ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:০৭
বয়স মাত্র ২২ বছর ৩০ দিন। সবমিলিয়ে অভিষেক ম্যাচের আবেগ মাথায় নিয়েই বিপিএলের মতো বড় আসরে মাঠে নেমেছিলেন ডানহাতি স্পিনার আলিস আল ইসলাম। কিন্তু এমন উত্তেজনার ম্যাচেই ইতিহাসে নিজের নাম লিখিয়ে ফেললেন অখ্যাত এই বোলার।
ছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার। তাও এবারের মৌসুমেই প্রথম। নেটে তার স্পিন ম্যাজিক ঢাকার ম্যানেজমেন্টের চোখে লাগে। নিখুঁত লেংথ ও টার্নিং দেখে আর ডানে-বায়ে না তাকিয়ে সোজা ঢাকার একাদশে জায়গা করে দেন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
কে এই আলিস? বাংলাদেশি তো? শুধু বাংলাদেশ না, আজ আলিস আল ইসলামের খোঁজ নেবে আন্তর্জাতিক মিডিয়াও। কেননা অচেনা-অখ্যাত এই বোলার আজ গড়েছেন অনন্য এক বিশ্ব রেকর্ড। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের কীর্তি এর আগে কারও ছিল না। না ঘরোয়া টি-টুয়েন্টিতে, না আন্তর্জাতিক ম্যাচেও। সেই রেকর্ডটাও আজ হয়ে গেল।
আলিস আল ইসলাম আজ রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নিজের তৃতীয় ও ইনিংসে ১৮তম ওভারের শেষ তিন বলে মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ফরহাদ রেজাকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন। ঢাকার প্রিমিয়ার লিগেই খেলেননি আজকের অভিষিক্ত এই স্পিনার। ঢাকার প্রথম বিভাগের ক্রিকেটে অবশ্য খেলেছেন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের উথ্থানের কথা জানালেন ডায়নামাইটস এই হ্যাটট্টিক ম্যান। ‘আমি ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার ছিলাম। আগে আমি ঢাকা ফাস্ট ডিভিশনে খেলেছি। নেট বোলিং করার সময় সুজন (ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন) স্যার আমাকে দেখেন। দেখে ওনার বিশ্বাস হয় যে আমি ভালো করতে পারব, তারপর আমাকে টিমে নেয়। তারপর টিম ম্যানেজমেন্ট, প্লেয়াররা আমাকে সাপোর্ট করে। তারপর আমি সেরা একাদশে।’
নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে আলিস বলেন, ‘আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করি কলাবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব থেকে। তারপর কয়েক বছর সেকেন্ড ডিভিশন খেলার পর ফাস্ট ডিভিশন খেলি। তারপর এই বিপিএল।’
আলিসকে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে বোলিংয়ে এনেছিলেন সাকিব। এর মধ্যে ফিল্ডিংয়ে দুবার এমন ক্যাচ ফেলেছেন, মনে হচ্ছিল, এত দর্শক, ফ্লাড লাইডের আলোয় যেন ভড়কে গেছেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হ্যাটট্রিক!
নিজের খেলে নিয়ে নিজেই খোলাসা করলেন আলিস। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে এটা আমার প্রথম ম্যাচ। খোলাসা করে বলতে গেলে স্টেডিয়ামেই এটা আমার প্রথম ম্যাচ। আমি আসলে অনেক নার্ভাস ছিলাম। তবে ক্যাচ দুটি ড্রপ করার পর সতীর্থরা অনেক সাহস দিয়েছে। কোচ সাহস দিয়েছেন। সবাই অনেক সাহস দিয়েছেন। তাতে আমার মনে হয়েছে যে, ভালো জায়গায় বল করতে পারলে ভালো কিছু হতে পারে। আমি শুধু ভালো জায়গায় বল করতে চেয়েছি।’
ম্যাচের শেষ ওভারে বোলিংয়ে আনা হয় আলিসকে। রংপুরের প্রয়োজন তখন ১৪ রান। ওই ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভালো শুরু করেন শফিউল ইসলাম। কিন্তু শেষ ৪ বলে মাত্র ৩ রান খরচ করে দলকে ২ রানের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন ‘হ্যাটট্রিক বয়’ আলিস।
এর আগে ম্যাচের ও এখন পর্যন্ত চলতি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ স্কোরার রাইলি রুশোর উইকেটটিও তুলে নিয়েছিলেন আল ইসলাম। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ২৬ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরাও নির্বাচিত হয়েছেন এই ‘অখ্যাত থেকে বিখ্যাত’ বনে যাওয়া তরুণ স্পিনার।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড