• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গ্রন্থ প্রকাশ এবং বিক্রয়ের রেকর্ডের মাধ্যমে শেষ হলো একুশে গ্রন্থমেলা

  অধিকার ডেস্ক    ০৩ মার্চ ২০১৯, ১৩:৫৪

ছবি
ছবি : গ্রন্থমেলার শেষ দিনে পাঠকদের উপচে পড়া ভিড় ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হয় গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি)। যদিও গ্রন্থমেলার ঐতিহ্য ভেঙ্গে দ্বিতীয় বারের মতো লেখক ও প্রকাশকদের দাবির প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গ্রন্থমেলার সময় বৃদ্ধি পেয়েছিলো আরও দুদিন। দুদিনের শেষ দিন ছিলো রবিবার (২ মার্চ)। রাত নটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবগুলো স্টল এবং প্যাভিলিয়নে আলো নিভে সাথে সাথে নেমে যায় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯’ এর পর্দা।

গ্রন্থ প্রকাশ এবং বিক্রয়ের রেকর্ড গড়ল ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯’। এবছর গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ৪ হাজার ৮৩৪টি গ্রন্থ। যা গতবছরের চেয়ে ২৪৩টি বেশি এবং বিক্রির দিক থেকেও এবছর অনেক এগিয়ে। এবছর বাংলা একাডেমিতে গ্রন্থ বিক্রি হয়েছে আনুমানিক ২ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকার এবং প্রকাশকদের গ্রন্থ বিক্রি করেছে ৭৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যা গতবারের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

এবছর গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থের ভিতরে কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ছিলো ১৬০৮টি। এছাড়াও প্রকাশিত হয়েছে গল্পগ্রন্থ ৭৫৭টি। উপন্যাস ৬৯৮টি। প্রবন্ধ-২৭২টি। গবেষণাভিত্তিক গ্রন্থ ৮০টি। ছড়া গ্রন্থ ১৪৮টি। শিশুতোষ গ্রন্থ ১৫০টি। জীবনীভিত্তিক গ্রন্থ ১৬৭টি। রচনামূলক গ্রন্থ ১৫টি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রন্থ১১০টি। নাটক ৪৩টি। বিজ্ঞানভিত্তিক গ্রন্থ ৭৭টি। ভ্রমণমূলক গ্রন্থ ৮৫টি। ইতিহাসমূলক গ্রন্থ ৭৭টি। রাজনীতিমূলক গ্রন্থ ৩৩টি। রম্য বা ধাঁধা গ্রন্থ ৩৭টি। কম্পিউটারভিত্তিক গ্রন্থ ৫টি। ধর্মীয় গ্রন্থ ২৫টি। অনুবাদ গ্রন্থ ছিলো ৩৮টি। অভিধান ছিলো ৬টি। সায়েন্স ফিকশন ছিলো ৪৫টি এবং অন্যান্য প্রকাশিত গ্রন্থ ছিলো ৩৩০টি।

এবারের বইমেলায় ৫২৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিলো। এ ছাড়া ১৮০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো। এবার বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে ১০৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫০টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬২০টি ইউনিটসহ মোট ৪৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭০টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়ে ছিলো।

২০১৯ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মধ্যমা (এক ইউনিট), বাতিঘর (বহু ইউনিট), পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-(প্যাভেলিয়ন)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করে বাংলা একাডেমি।

এছাড়াও ২০১৮ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯, ২০১৮ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থ বিভাগে গোলাম মুরশিদের ‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত : নজরুল-জীবনী’ গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশনকে, মইনুদ্দীন খালেদের ‘মনোরথে শিল্পের পথে’ গ্রন্থের জন্য জার্নিম্যান বুক্সকে এবং মারুফুল ইসলামের ‘মুঠোর ভেতর রোদ’ গ্রন্থের জন্য চন্দ্রাবতী একাডেমিকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯ প্রদান করা হয়।

গ্রন্থমেলা শুরুর দিকে যে প্রত্যাশা ছিলো প্রকাশকদের তারচেও বেশি পূর্ণ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। খড়িমাটির প্রকাশক মনরিুল মনির দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিলো বইগুলোকে পাঠকদের কাছে পৌঁছানো। সেটা আমরা করতে পেরেছি। লাভ-ক্ষতির হিসেব করনি কখনো। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের লাভ-ক্ষতির চেয়ে বড় বিষয় হলো পাঠকদের কাছে প্রকাশিত গ্রন্থে এনে দেওয়া। সেটা আমরা করতে পেরে আনন্দিত।’

অন্যদিকে কবি প্রকাশনের প্রকাশক সজল আহমেদ বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় এই বছর অনেক ভালো বই বিক্রি হয়েছে। তবে দুদি গ্রন্থমেলা বৃদ্ধির জন্য মাননয়ী প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ দুদিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অনেক পাঠক গ্রন্থমেলায় এসে খালি হাতে ফিরেগেছেন। আমরা চেয়েছি এই পাঠকগুলো গ্রন্থমেলায় আর একবার আসুক।’

গ্রন্থমেলায় নতুন লেখকের পাশাপাশি এবার প্রকাশ হয়েছিলো প্রবীণ লেখকদেরও। এছাড়াও বরেণ্য লেখকদের বইও এসেছিলো। হাসান আজিজুল হক, যতীন সরকার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, আল মাহমুদসহ জনপ্রিয় অনেক লেখকের গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধসমগ্র মেলায় পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়াও বিশ্বকবি রবীন্দ্রসমগ্র পাওয়া যাচ্ছে পাঠক সমাবেশে। অন্যদিকে নজরুল ইন্সটিটিউট ও বাংলা একাডেমিতে মিলবে নজরুলসমগ্র যা পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড