• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কবি রফিক আজাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

  অধিকার ডেস্ক    ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:১২

কবি আজাদ
ছবি : কবি রফিক আজাদ

অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৩তম দিন গতকাল (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল চারটায় গ্রন্থমেলায় অনুষ্ঠিত হলো কবি রফিক আজাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার। আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, কবি অসীম সাহা, কবি ফারুক মাহমুদ এবং কবি জাফর আহমদ রাশেদ।

অনিুষ্ঠানে কবি রফিক আজাদ সম্পর্কে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘বিশ শতকের ষাটের দশকে বাংলাদেশের কবিতাধারার যে নবীন ও দীপ্র, ক্ষুব্ধ ও দীপ্র কবি প্রবংশের আবির্ভাব, রফিক আজাদ তাদের অন্যতম। সংক্ষুব্ধ ষাটের দশকে প্রথম হাজিরা দিয়ে তিনি অতিক্রম করেছেন পঞ্চাশের অধিক সৌরবর্ষ। দীর্ঘ এই সময়খণ্ডে, নিরন্তর সাধনায়, কবি রফিক আজাদ নির্মাণ করেছেন নিজস্ব এক শিল্পভুবন; বিষয়-বৈচিত্র্যে এবং প্রকরণ-প্রসাধনে সাজিয়ে তুলেছেন প্রাতিস্বিক এক কবিতাভবন। কাব্যযাত্রার সূচনালগ্নে সমাজ ও মানুষ সম্পর্কে নির্লিপ্ত থাকলেও, ক্রমেই তিনি সংলগ্ন হয়েছেন বৃহত্তর জাতিসত্তার সঙ্গে, স্বদেশের মৃত্তিকা ও মানুষের সঙ্গে। সন্দেহ নেই, ব্যক্তির অন্তর্গত উপলব্ধিই কবি রফিক আজাদের কবিতার মূল সুর, তবে ব্যক্তির সীমানা ছাড়িয়ে তাঁর কবিতায় নীরবে ভেসে ওঠে স্বদেশের মুখ, তাঁর কণ্ঠেই শোনা যায় প্রত্ন-নৃগোষ্ঠীর যাপিত জীবনের সুর আর স্বর। তিনি বলেন, বিষয়-গৌরবে যেমন, তেমনি প্রকরণ-পরিচর্যায়ও কবি রফিক আজাদ স্বয়ং-স্বতন্ত্র এবং অনুপম। কবিতায় উপমা রূপক চিত্রকল্প নির্মাণে তিনি রেখেছেন স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর, শব্দ-ব্যবহারে তিনি নিয়ত সৃষ্টিশীল ও পরীক্ষাপ্রিয়। তাঁর কবিতা পাঠকের ভাবনা-বিশ্বকে আলোড়িত করে, চেতনায় তোলে অভিঘাত। কেন্দ্রের পরিবর্তে তাঁর কবিতা প্রান্তের জয়গানে। এসব প্রবণতাই সমকালীন বাংলা কবিতায় তাঁকে করে তুলেছে বিশিষ্ট ও ব্যতিক্রমী।’

সভাপতির বক্তব্যে রশীদ হায়দার বলেন, ‘রফিক আজাদ মানেই জীবন, তারুণ্য এবং সুন্দরের প্রতি পক্ষপাত। তাঁর মতো বিশুদ্ধ কবির আবির্ভাব বাংলাদেশের কবিতার জগতকে করেছে ঋদ্ধ। কবিসত্তার বাইরে তাঁর ব্যক্তিসত্তাও ছিল সমান আকর্ষণীয়। ব্যক্তিগতজীবনে তাঁর মতো দেশপ্রেমিক, বন্ধুবৎসল, উদার-মানবিক মানুষের সন্ধান পাওয়া সত্যিই কঠিন ব্যাপার। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি রফিক আজাদের সাতাত্তরতম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণের আয়োজন করে কবিতাপ্রেমী ও সাহিত্যানুরাগী সকলের কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছে।’

এছাড়াও আলোচকবৃন্দ বলেন, ‘রফিক আজাদ বাংলা কবিতায় এক অনিবার্য নাম। তাঁর কবিতা ব্যক্তিক ও সমষ্টিক বোধের ধারক। শব্দকে কী করে চেতনার গভীরতম উপলব্ধির বাহক করে তোলা যায়- রফিক আজাদের কবিতা তার এক শৈল্পিক দৃষ্টান্ত। তিনি সামরিক শাসনের বুটের তলায় চাপা পড়া জীবনযৌবনের রুদ্ধদ্বারকে মুক্ত করার সাধনা করেছেন কবিতায়। তাঁরা বলেন, রফিক আজাদ একজন বিরল সম্পাদকও বটে। বাংলা একাডেমির সাহিত্যপত্র উত্তরাধিকার, রোববার, ঘরে বাইরে ইত্যাদি সাময়িকপত্র সম্পাদনার মধ্য দিয়ে তিনি নবীন লেখকের স্বর আবিষ্কার করেছেন। গদ্যে ততটা সক্রিয় না হলেও তাঁর আত্মজীবনী ‘কোনো খেদ নেই’ বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি ভুবনের এক প্রামাণ্য দলিল হয়ে রয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড