• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধু রবি শঙ্করের জন্মদিন আজ

  অধিকার ডেস্ক    ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ১১:২১

ছবি
ছবি : বাংলাদেশের বিদেশি বন্ধু রবি শঙ্কর

১৯৭২ সালে সল সুইমার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ মুক্তিপ্রাপ্ত হয়। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয় দুটি কনসার্টের ঘটনার উপরে ভিত্তি করে। ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত এই কনসার্ট দুটি ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্তর্জাতিক সচেতনতা এবং শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ তহবিল বাড়ানো। এই কনসার্টে গয়েছিলেন জর্জ হ্যারিসন এবং ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীত কিংবদন্তি রবি শঙ্কর। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রীতি এই মানুষটির আজ জন্মদিন।

তিনি ১৯২০ সালের ৭ এপ্রিল ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারসে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তার আদি নিবাস ছিল বাংলাদেশের যশোর জেলায়। তার প্রকৃত নাম ছিলো রবীন্দ্র শঙ্কর চৌধুরী। পিতার নাম শ্যাম শঙ্কর চৌধুরী এবং মা হেমাঙ্গিনী দেবী। জীবিকার সন্ধানে তাদের পরিবার যশোর থেকে বেনারসে চলে গিয়েছিলেন।

রবি শঙ্কর ১৯৩০ সালে মায়ের সাথে প্যারিসে বড় ভাইয়ের কাছে চলে যান এবং সেখানেই আট বছর স্কুলে শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন। মাত্র বার বছর বয়স থেকেই রবি শঙ্কর তার বড় ভাইয়ের নাচের দলের একক নৃত্যশিল্পী ও সেতার বাদক হন। ঐ বয়স থেকেই তিনি অনুষ্ঠান করে বেড়িয়েছেন ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন শহরে।

১৯৩৮ সালে আঠারো বছর বয়সে রবি শঙ্কর তার বড় ভাই উদয় শংকরের নাচের দল ছেড়ে মাইহারে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অমর শিল্পী আচার্য আলাউদ্দীন খান সাহেবের কাছে সেতারের দীক্ষা নিতে শুরু করেন। দীক্ষা গ্রহণকালে তিনি আচার্যের পুত্র সরোদের অমর শিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর খানের সংস্পর্শে আসেন। তাঁরা পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে সেতার-সরোদের যুগলবন্দি বাজিয়েছেন। গুরুগৃহে রবি শংকর দীর্ঘ সাত বছর সেতারে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৯৩৯ সালে ভারতের আহমেদাবাদ শহরে রবি শঙ্করের সর্বপ্রথম সাধারণের জন্য উন্মুক্ত একক সেতার পরিবেশন অনুষ্ঠান হয়। সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পণ্ডিত রবি শঙ্কর নিজেকে তুলে ধরেছেন একজন বৈশ্বিক সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীত স্রষ্টা, পারফর্মার এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একজন মেধাবী দূত হিসেবে। ১৯৪৫ সালের মধ্যে রবি শঙ্কর সেতার বাদক হিসেবে ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একজন শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে যান।

এই সময়ে রবি শঙ্কর তার সাঙ্গীতিক সৃজনশীলতার অন্যান্য শাখায়ও পদচারণা শুরু করেন। তিনি সুর সৃষ্টি, ব্যালের জন্য সঙ্গীত রচনা এবং চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেন। এই সময়ের বিখ্যাত ধরত্রী কি লাল এবং নীচা নগর চলচ্চিত্র দুটির সঙ্গীত রচনা ও সুরারোপ করেন। তিনি কবি ইকবালের সারে জাঁহা সে আচ্ছা কবিতাকে অমর সুরে সুরারোপিত করে ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীতের পর সবচেয়ে জনপ্রিয় গান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

১৯৪৯ সালে রবি শঙ্কর দিল্লীতে অল ইন্ডিয়া রেডিওর সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। একই সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বৈদ্য বৃন্দ চেম্বার অর্কেষ্ট্রা । ১৯৫০ হতে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত রবি শঙ্কর অত্যন্ত নিবিড়ভাবে সঙ্গীত সৃষ্টিতে ব্যাপৃত ছিলেন। এ সময়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি হলো সত্যজিৎ রায়ের অপু ত্রয়ী (পথের পাঁচালী, অপরাজিত ও অপুর সংসার) চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা। পরবর্তীতে তিনি চাপাকোয়া (১৯৬৬) চার্লি (১৯৬৮) ও গান্ধী (১৯৮২) সহ আরো চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।

১৯৬২ সালে পণ্ডিত রবি শঙ্কর কিন্নর স্কুল অব মিউজিক, বম্বে এবং ১৯৬৭ সালে কিন্নর স্কুল অব মিউজিক, লস এন্‌জেলেস স্থাপন করেন।

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন ভারতীয় শিল্পের সর্বোচ্চ সম্মাননা রাষ্ট্রপতি পদক। এছাড়া পদ্মভূষণ, ভারতরত্ন, ফরাসি সর্বোচ্চ সিভিলিয়ান এওয়ার্ড লিজিয়ন অব অনার, রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক প্রদত্ত অনারারী নাইট হুড’সহ অন্যান্য পুরস্কার।

বাংলাদেশের বন্ধু এই মানুষটি ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

তথসূত্র - ইন্টারনেট

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড