• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ ‘ঋত্বিক ঘটক’

  অধিকার ডেস্ক    ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:১২

ছবি
ছবি : বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ ঋত্বিক ঘটক

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ ঋত্বিক ঘটক। তিনি ছিলেন এক চলচ্চিত্র পাগল মানুষ। যার চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু ‘নাগরিক’ দিয়ে। ভালো কাজ অল্প হলেও তার মাধ্যমে বেঁচে থাকা যায় তা দেখিয়েছেন তিনি। সেলুলয়েডের ফিতায় ফ্রেমের পর ফ্রেম বন্দি করে দেখিয়েছেন কবিতা কি করে মানুষের দৃশ্যমান ছবি হয়ে ওঠে। গণ মানুষের জীবন কি করে চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে। এই চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষের আজ ৪২তম প্রয়াণ দিবস।তিনি ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে পরলগমন করেন।

পুরুষ ঋত্বিক ঘটক ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিলো সুরেশ চন্দ্র ঘটক, মা ইন্দুবালা দেবী। পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই শিল্প-সাহিত্যের চর্চা ছিল। বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হলেও কবিতা ও নাটক লিখতেন।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর শরণার্থী হতে হয়েছিলো ঋত্বিক ঘটকের পরিবারকে। জন্মভূমি ত্যাগ করে শরণার্থী হওয়ার মর্মবেদনা তিনি কোনোদিনও ভুলতে পারেননি। অস্তিত্বের সংকট তাকে গভীরভাবে আলোড়িত করেছিলো এবং আমৃত্যু এই যন্ত্রণা বয়ে বেরিয়েছেন। এর প্রমাণ তার সৃষ্টিতে বিদ্যমান। তার জীবদ্দশায় মাত্র ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন।

তিনি অদ্বৈত মল্লবর্মনের বিখ্যাত উপন্যাস ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সেলুলয়েডের ফ্রেমে এঁকেছেন জীবনের চিরায়ত ছবি। এছাড়াও ঋত্বিক ঘটক নির্মাণ করেছেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬১) ও ‘সুবর্ণরেখা’ (১৯৬৫)। এরপর ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিকের শেষ ছবি ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’। কাহিনীর ছলে তিনি নিজের কথা বলে গেছেন এ ছবিতে। ছবিটিতে নিজের রাজনৈতিক মতবাদকেও দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও ঋত্বিক ঘটক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন ১০টি। আরও অনেকগুলো কাহিনীচিত্র, তথ্যচিত্রের কাজে হাত দিয়েও শেষ করতে পারেননি। ঋত্বিক ঘটক তার সৃষ্টির মাধ্যমেই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।

‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’ নির্মাণের কিছুকাল পর ঋত্বিক ঘটক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এই অবস্থায় প্রায় তিনটি বছর মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মানসিক ভারসাম্য হারানো অবস্থাতেই উপমহাদেশের কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক মৃত্যুকে বরণ করে নেন।

বাংলা চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তী বেঁচে থাকতে তার সৃষ্টির মান অনুযায়ী যতটা সম্মান পাওয়ার কথা ছিলো ততটা তাকে দেওয়া হয়নি তবে ভারত সরকার ১৯৬৯ সালে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করে এবং তিনি ১৯৭৫ সালে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড