• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মিশন এক্সট্রিম : ভিন্ন গল্পের ভিন্ন ধারা

  মো. রিয়াজুল ইসলাম

০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:২৩
মিশন এক্সট্রিম
মিশন এক্সট্রিম (ছবি : সংগৃহীত)

হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমা মিশন এক্সট্রিম সিনেমা হলে গিয়ে দেখতে হবে। সময় অনুকূলে দেখে পুরান ঢাকার চিত্রা সিনেমা হলেই টিকেট কেনা হয়েছিল। প্রায় দুই শতাধিক আসনের এই চিত্রা হলে যাবার পর দেখলাম শো চলছে হাউজফুল, বহুদিন পর এ চিত্র দেখা গেল।

সিনেমার পর অনেককে এক প্রকার হতাশ মনে হলে জিজ্ঞাসা করে বসি কেমন লেগেছে? কেউ কেউ বলল ভালো আবার কেউ কেউ বলল কাহিনী তো বুঝি নাই কিছুই। পরের শোতেও হল হাউজফুল, সবাই তীব্র একটা আকর্ষণ নিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছে এটা স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছিল।

প্রথমত এটি একদম ভিন্নধর্মী একটা চলচ্চিত্র, হরহামেশা আমরা চলচ্চিত্র জগতের যেই ঘটনাগুলোকে মনে করতে পারি তার থেকে এটি ভিন্নধারার। যতগুলো চরিত্র এখানে আছে প্রতিটাই একটা ইউনিক বিষয়কে তুলে ধরেছে। শুরুর দিকের ঘটনা এমন যে ইন্টারভাল হলে মনে হবে আবার শুরু থেকে দেখে আসি।

অন্যান্য চলচ্চিত্রে এমন হয় যে মূল গল্প থেকে ছিটকে পড়ে কিন্তু এখানে এমন হয়নি, প্রতিটা ঘটনার সাথেই সূত্র আছে। সাধারণত এখন সবাই প্রেক্ষাগৃহে যায় রঙ্গরস টাইপের সিনেমার জন্য, আর এই সিনেমাকে বুঝতে হলে মস্তিষ্ককে রিল্যাক্স রেখে দেখা উচিত। ধন্যবাদ জানাতেই হয় সবাইকে যারা অভিনয় করেছেন।

যখন দেখতে ঢুকব তার পূর্বে বেশ কয়েকজন বলেছিল মজা পাবেন না ভাই। সিনেমা দেখার পর মনে হয়েছে, এই সিনেমা বুঝে ওঠার মতো অবস্থা এখনো আসলে তাদের হয়নি। বাংলাদেশের সিনেমা বানানোর বর্তমান যে দুরবস্থা সেখানে এমন সিনেমা আসাটা আসলেই গর্বের।

রেটিং এ গেলে এটাকে আমি ১০ এ ০৯ দিতে পারি। সাধারণত বাংলাদেশি সিনেমাতে ভিএফএক্স এর ব্যবহার যেমন হয়ে থাকে, এখানে তা অনেকটা অনেকটা ভিন্ন। ‌সমসাময়িক যে জঙ্গিবাদের সমস্যা, সেটা খুব ভালভাবে ফুটে উঠেছে সিনেমায়। বর্তমানের বেশিরভাগ সিনেমাই পরিবার নিয়ে একসঙ্গে বসে দেখার মতো না। কিন্তু মিশন এক্সট্রিম যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন ঘটনা নিয়ে আবৃত। গোয়েন্দা গল্প যাদের পরিচিত বা পছন্দের তারা বেশ রোমাঞ্চকর অনুভূতি পাবে নিশ্চিত। দর্শক সিনেমার ঘটনাতে ফোকাস করলে যথেষ্ট উপভোগ করবেন।

আরেফিন শুভ সহ বাকি অভিনেতাদের নিখুঁত অভিনয় অনেকটা প্রাণবন্ত করে তুলেছে গল্পকে। জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর প্রথম সিনেমা হলেও অভিনয় দেখে আসলে আঁচ করা যায়নি যে এটি তার প্রথম সিনেমা পর্দাতে আসা। এছাড়া ফজলুর রহমান বাবু, রাইসুল ইসলাম, দীপু ইমাম, আরেফ সৈয়দ, মনোজ প্রামাণিক, রাশেদ মামুন অপু, সৈয়দ নাজমুস সাকিবসহ বাকি সবার অভিনয়ের ধরন যথেষ্ট জীবন্ত ছিল।

তামিল, ইন্ডিয়ান বা আমেরিকান সিনেমাগুলো তৈরির মতো অতটা উন্নত প্রযুক্তি আমাদের নেই বা হয়ে উঠেনি তবে এখনো চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মেধা প্রজ্ঞা জীবিত এটা বলাই যায় নিঃসন্দেহে। সবচেয়ে বড় কথা সিনেমার গল্পটাকে অনুভব করতে হবে, সিনেমা মানেই সেখানে রঙ্গরস থাকতে হবে এমনটা না, সিনেমার গল্পটা কতটা আকর্ষণীয় সেটা দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের অধিকাংশ সিনেমাতে দেখা গেছে নায়ক নায়িকার আর তাদের বাবা মায়ের ঝামেলা মিটিয়ে দিতে গিয়ে সিনেমা শেষ। একই ধরনের প্রেম, বিরহ আর ভালোবাসার কাহিনী বারবার ঘুরেছে প্রতিটা সিনেমাতেই। তবে মিশন এক্সট্রিমে এমন পরিচিত কোনো কাহিনী নেই, প্রতিটা মুহূর্ত রোমাঞ্চকর অনুভূতি দেবে।

ধন্যবাদ জানাই পরিচালকবৃন্দ ও সিনেমার সঙ্গে সংযুক্ত সবাইকে। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এখন এমন কিছু গল্পের সিনেমা অনেক প্রয়োজন। মিশন এক্সট্রিম-২ এর অপেক্ষায় থাকলাম।

লেখক : শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড