• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সহজ জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

আট বছরের দুঃখ ঘোচাতে ব্যর্থ জিম্বাবুয়ে

  অধিকার ডেস্ক    ২১ অক্টোবর ২০১৮, ২২:৩২

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
জয়ের পর টাইগার ক্রিকেটারদের উল্লাস; (ছবি : আইসিসি টুইটার)

ব্যাটে-বলে দাপুটে নৈপুণ্য দেখাল বাংলাদেশ। তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সময়ে-সময়ে চাপে পড়লেও 'বড়' দলের মতোই তা কাটিয়ে উঠে জয় আদায় করে নিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজারা। ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর টাইগার বোলারদের দাপটে সফরকারী জিম্বাবুয়ে ম্যাচটা হারল ২৮ রানে। তাতে বাংলাদেশের মাটিতে ৮ বছর জয় না পাওয়ার অপেক্ষার প্রহরটা আরও দীর্ঘ হলো তাদের।

রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে স্বাগতিক বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে করে ২৭১ রান। জবাবে পুরো ৫০ ওভার খেললেও হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দল ৯ উইকেটে ২৪৩ রানের বেশি করতে পারেনি। ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্টিভ রোডসের শিষ্যরা।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ওপেনার চেফাস ঝুওয়াও বেশ আধিপত্য বিস্তার করছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে বোলিং শুরু করা দুই বোলারের ওপর। টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মেহেদী হাসান মিরাজ তার বিপক্ষে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসেই তাকে বোল্ড করে জিম্বাবুয়ের প্রথম উইকেটের পতন ঘটান মুস্তাফিজুর রহমান।

৪ চার ও ২ ছয়ে ঝুওয়াও করেন ২৪ বলে ৩৫ রান। তার কল্যাণে উদ্বোধনী জুটিতে ৭ ওভারে ৪৮ রান করে সফরকারীরা। কিন্তু এরপর ১৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় দলটি। মুস্তাফিজের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেননি ঝুওয়াও। তার অফ স্ট্যাম্প উপড়ে নেন কাটার মাস্টার।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসে প্রথম আঘাত করেন মুস্তাফিজ; (ছবি : আইসিসি টুইটার)

এরপর অভিজ্ঞ তারকা ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে তাকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। বোল্ড হওয়ার আগে টেইলর ১৩ বল খেলে করেন ৫ রান।

এক প্রান্ত আঁকড়ে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা হন রানআউটের শিকার। ইমরুলের থ্রো উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম লুফে নিয়ে ডাইভ দিয়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন। তাতে ৩৪ বলে ২১ রান করে ফেরেন মাসাকাদজা।

এরপর চতুর্থ উইকেটে আরভিন-রাজা মিলে ৫২ বলে গড়েন ২৫ রানের সংগ্রামী জুটি। রাজাকে বোল্ড করে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় সাফল্য পান নাজমুল ইসলাম অপু। বাঁহাতি স্পিনারের ঘূর্ণি বলে উইকেট হারানোর আগে তিনি করেন ২২ বলে ৭ রান।

অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের বলে ব্যক্তিগত ১০ রানে মুশফিকের কাছ থেকে জীবন পাওয়া আরভিনকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম স্পেলে মার খাওয়া এই স্পিনার আক্রমণে ফিরেই পান উইকেটের দেখা। ৪৮ বলে ১ চারে ২৪ রান করেন আরভিন। তাতে ১০০ রানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

টেইলরকে বোল্ড করেন নাজমুল; (ছবি : আইসিসি টুইটার)

ষষ্ঠ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শন উইলিয়ামস ও পিটার মুর। কিন্তু মিরাজ দেখাতে শুরু করেন নিজের কারিশমা। তিনি মুরকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলার পরের ওভারেই ডোনাল্ড তিরিপানোকে রানআউট করেন অভিষিক্ত ফজলে মাহমুদ রাব্বি।

৬৩ বলে ৪৫ রানের জুটিতে মুরের অবদান ৪৫ বলে ২৬ রান। তিরিপানো ৪ বল খেলে করেন ২ রান। এরপর রানের গতি বাড়িয়ে খেলার চেষ্টা করা ব্রান্ডন মাভুতাকে ফিরতি ক্যাচে পরিণত করে নিজের তৃতীয় উইকেটের দেখা পান মিরাজ। ১৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২০ রানে শেষ হয় মাভুতার ছোট্ট ঝড়।

৪০ ওভারের মধ্যে ১৬৯ রানে জিম্বাবুয়ের ৮ উইকেটের পতন হলেও হারার আগেই হার মানতে রাজি ছিল না দলটি। নবম উইকেটে দশম ব্যাটসম্যান কাইল জার্ভিসের সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫২ বলে ৬৭ রানের দারুণ একটি জুটি গড়েন উইলিয়ামস। তাতে কমে দলটির হারের ব্যবধান।

মাহমুদউল্লাহর বলে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ার আগে জার্ভিস ৩৩ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে করেন ৩৭ রান। রিভিউ অবশ্য নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে মাঠের সিদ্ধান্ত বদলায়নি। তার বিদায়ের পর দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থাকা উইলিয়ামস পান হাফসেঞ্চুরির স্বাদ।

৪৬ রানের বিনিময়ে মিরাজ পান ৩ উইকেট; (ছবি : ক্রিকইনফো)

শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে থামে ৯ উইকেটে ২৪৩ রানে। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা উইলিয়ামস ৫০ ও টেন্ডাই চাতারা ২ রানে অপরাজিত থাকেন। টাইগারদের হয়ে ৪৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট পান মিরাজ। ৩৮ রানে ২ উইকেট নেন নাজমুল। একটি করে উইকেট গেছে মুস্তাফিজ ও মাহমুদউল্লাহর ঝুলিতে।

এর আগে স্কোরবোর্ডে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করে বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে ইমরুল ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১৪০ বলে ১৪৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। গেল জানুয়ারির পর প্রথমবার খেলতে নেমে তরুণ সাইফ ৬৯ বলে করেন গুরুত্বপূর্ণ ৫০ রান।

এক পর্যায়ে ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তারপর সপ্তম উইকেটে রেকর্ড ১২৭ রানের জুটি গড়েন ইমরুল ও সাইফ। আর বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ব্যক্তিগত ইনিংস খেলে মুশফিককে ছুঁয়ে ফেলেন বাঁহাতি ইমরুল।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ইমরুল; (ছবি : আইসিসি টুইটার)

ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে জার্ভিস ৩৭ রানে নেন ৪ উইকেট। চাতারা ৩ উইকেট পান ৫৫ রানের বিনিময়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ : ২৭১/৮ (৫০ ওভারে) (লিটন ৪, ইমরুল ১৪৪, ফজলে মাহমুদ ০, মুশফিক ১৫, মিঠুন ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ০, মিরাজ ১, সাইফ ৫০, মাশরাফি ২*, মুস্তাফিজ ১*; জার্ভিস ৪/৩৭, চাতারা ৩/৫৫, তিরিপানো ০/৬০, মাভুতা ১/৪৮, রাজা ০/৩৭, উইলিয়ামস ০/৩২)

জিম্বাবুয়ে : ২৪৩/৯ (৫০ ওভারে) (মাসাকাদজা ২১, ঝুওয়াও ৩৫, টেইলর ৫, আরভিন ২৪, সিকান্দার ৭, উইলিয়ামস ৫০*, মুর ২৬, তিরিপানো ২, মাভুতা ২০, জার্ভিস ৩৭, চাতারা ২*; মাশরাফি ০/৫৫, মিরাজ ৩/৪৬, মুস্তাফিজ ১/২৯, নাজমুল ২/৩৮, সাইফ ০/২৯, মাহমুদউল্লাহ ১/২৪, ফজলে মাহমুদ ০/১৬)

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড