অধিকার ডেস্ক ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২৬
১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের হাল ধরেন ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে ৪৯তম ওভার পর্যন্ত টেকেন ইমরুল। হাঁকান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। সঙ্গ দেওয়া সাইফ তুলে নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম হাফসেঞ্চুরি। তাদের রেকর্ড জুটির দৃঢ়তায় বাংলাদেশ পেল চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।
রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান করল বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের পক্ষে ইমরুল ১৪০ বলে ১৪৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। গেল জানুয়ারির পর প্রথমবার খেলতে নেমে সাইফ ৬৯ বলে করেন গুরুত্বপূর্ণ ৫০ রান।
সপ্তম উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়েন ইমরুল-সাইফ। ১১৬ বলে ১২৭ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহ নিশ্চিত হয় মাশরাফি বিন মর্তুজাদের। ওয়ানডেতে সপ্তম উইকেটে আগের রেকর্ড ছিল মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলামের ১০১ রান। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনে ওই কীর্তি গড়েছিলেন তারা।
বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলেন ইমরুল। ১৪৪ রান করে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন এশিয়া কাপে অনবদ্য ইনিংস খেলা মুশফিককে। তবে টাইগার অভিজ্ঞ তারকা মুশফিকের চেয়ে কম বল খেলেন ইমরুল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই ম্যাচে মুশফিক খেলেছিলেন ১৫০ বল।
তবে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা এদিনও ভালো হয়নি। মাত্র ১৭ রানের মধ্যে বিদায় নেন ওপেনার লিটন দাস ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা ফজলে মাহমুদ। একের পর এক বিপজ্জনক শট খেলতে থাকা লিটন জীবনও পেয়েছিলেন একবার। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা ফজলে মাহমুদও হতাশ করেন।
দুজনকেই ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে পাঁচ বলের ব্যবধানে ফেরান পেসার টেন্ডাই চাতারা। লিটন ১৪ বলে ৪ ও ফজলে মাহমুদ ৪ বলে ০ রান করে বিদায় নেন। এরপর ওপেনার কায়েস ও নির্ভরতার প্রতীক মুশফিক মিলে টেনে নিচ্ছিলেন টাইগারদের ইনিংস। কিন্তু ব্রান্ডন মাভুতার বলে মুশফিক উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে ভাঙে দুজনের ৪৯ রানের জুটি।
বাজে বল পুল করতে গিয়েছিলেন মুশফিক। বল তার ব্যাটের কানায় ছুঁয়ে পৌঁছায় ব্রেন্ডন টেইলরের গ্লাভসে। জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়দের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় তারা। তাতে মেলে সাফল্য। মাঠের সিদ্ধান্ত বদলে মুশফিককে আউট ঘোষণা করা হয়।
দলীয় ৬৬ রানে মুশফিক বিদায় নেওয়ার পর মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে কায়েস তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। ইনিংসের ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে তিনি পূরণ করেন ফিফটি। ৫ চার ও ১ ছয়ে ৬৪ বলে ৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
কায়েস-মিঠুন জুটিতে দুজনই ছিলেন সাবলীল। তাতে বাংলাদেশ দেখছিল বড় স্কোরের স্বপ্ন। কিন্তু সেই কাজটাকে কায়েসের একার দায়িত্ব বানিয়ে ২ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরলেন মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনজনকেই নিজের শিকার বানান কাইল জার্ভিস। নিজের তৃতীয় স্পেলে বল করতে এসে এই ডানহাতি পেসার একেবারে ধসিয়ে দেন টাইগারদের মিডলঅর্ডার।
মিঠুন ৪০ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ৩৭ রান করেন। বাংলাদেশের আরেক ভরসা মাহমুদউল্লাহ ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। ২৮তম ওভারে দুজনই বিদায় নেন। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে টেইলরের হাতে পৌঁছালেও তিনি টের পাননি। আম্পায়ার তাকে আউট দিলে নেন রিভিউ। কিন্তু বিফলে যায় তার আবেদন।
এক ওভার পর ফের আক্রমণে এসে ৪ বল খেলে ১ রান করা মিরাজকেও ফেরান জার্ভিস। তিনজনই ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে টেইলরের হাতে। ফলে ৩ উইকেটে ১৩৭ রান থেকে ৬ উইকেটে ১৩৯ রানের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। এরপর টাইগার ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া জুটি গড়েন ইমরুল ও সাইফ।
চাতারার করা ৪৩তম ওভারের প্রথম বলটি লং অফে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে ১১৮ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ইমরুল। সেঞ্চুরি পূরণ করার পর মেরে খেলতে শুরু করেন তিনি। চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন তিনি। যোগ দেন সাইফও।
শেষ পর্যন্ত জার্ভিসের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন ইমরুল। তিনি আউট হওয়ার পরের বলেই ফিফটি ছুঁয়ে ফেলা সাইফ আউট হন চাতারার বলে। ইমরুলের ইনিংসে ছিল ১৩ চার ও ৬ ছক্কা। সাইফ ১ ছক্কার সঙ্গে মারেন ৩ চার। তাদের কল্যাণে শেষ ৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করে ৫৬ রান।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে জার্ভিস ৩৭ রানে নেন ৪ উইকেট। চাতারা ৩ উইকেট পান ৫৫ রানের বিনিময়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ২৭১/৮ (৫০ ওভারে) (লিটন ৪, ইমরুল ১৪৪, ফজলে মাহমুদ ০, মুশফিক ১৫, মিঠুন ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ০, মিরাজ ১, সাইফ ৫০, মাশরাফি ২*, মুস্তাফিজ ১*; জার্ভিস ৪/৩৭, চাতারা ৩/৫৫, তিরিপানো ০/৬০, মাভুতা ১/৪৮, রাজা ০/৩৭, উইলিয়ামস ০/৩২)
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড