• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : সুবিধা-অসুবিধার মারপ্যাঁচ

  ডা. মোঃ সাইফুল ইসলাম

০৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:০২
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টেফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বলতে এক ধরনের যন্ত্রের উদ্ভাবনকে বোঝায় যার নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা করার শক্তি থাকবে এবং মানুষের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এটি হবে এক ধরনের কম্পিউটার সিস্টেম যা এমন সব কাজের জন্য ব্যবহৃত হবে যেখানে আজও মানুষের প্রয়োজন পড়ছে। অর্থাৎ এই পদ্ধতি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে মানুষের প্রয়োজন ছাড়াই কম্পিউটার সিস্টেমের দ্বারা কাজ হয়ে যাবে।

বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ক্ষেত্র অনেক ব্যাপক। এর দ্বারা গাড়ি নির্মাণ, ওয়েবসাইট ব্রাউজ, রোবট নির্মাণ, চিকিৎসাশাস্ত্র, মহাকাশ স্টেশন ইত্যাদিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহৃত হচ্ছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবক হচ্ছেন জন ম্যাককার্থি। বর্তমানে ম্যাককার্থির উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। এই যন্ত্রে মানবীয় আবেগ অনুভূতি প্রবেশ করানোর চিন্তা-ভাবনাও করছেন বিজ্ঞানীরা।

সবকিছুরই সুবিধা-অসুবিধা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তাও তার ব্যতিক্রম নয়। চলুন জানা যাক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যাবতীয় সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে-

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা :

জিপিএস প্রযু্ক্তির সুবিধা :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা মোবাইল ফোন অথবা গাড়িতে থাকা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজেই এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডে আর রাস্তা চেনার প্রয়োজন পড়বে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।

খনিজ সম্পদ, পেট্রোল ও জ্বালানি অনুসন্ধান :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় এমন সব কাজ করা যাবে যা মানুষ দ্বারা করা সম্ভব হবে না। গভীর সমুদ্রের তলদেশে খনিজ পদার্থ, পেট্রোল ও জ্বালানির খোঁজ করা এবং খনি খননের কাজ খুবই কঠিন হয়ে থাকে। তাছাড়াও সমুদ্রের তলদেশে পানির প্রচণ্ড চাপ থাকে। এ জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রের সহায়তায় সহজেই কাজগুলো করা যাবে।

খেলার প্রশিক্ষণ :

আজকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা ক্রিকেট, ফুলবল, বেসবল, দাবা ইত্যাদি খেলার ছবি তোলা হচ্ছে। এটি খেলার প্রশিক্ষণও দিতে পারছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্র :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা চিকিৎসা ক্ষেত্রে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অপারেশন, এক্সরে, রেডিও সার্জারি ইত্যাদি কাজ সফলতার সাথে করা যাচ্ছে।

অন্যান্য সুবিধা :

সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাবে। এগুলো ক্লান্ত হবে না। যেখানে মানুষ কিছুক্ষণ কাজ করার পর ক্লান্ত হয় সেখানেও এই যন্ত্র শতভাগ সফলতার সাথে কাজ করতে পারবে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা :

বেকারত্ব বৃদ্ধি :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। ফ্যাক্টরি, ব্যাংক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র ব্যবহৃত হলে হাজার হাজার লোক বেকার হয়ে পড়বে।

খরচ বৃদ্ধি :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রে খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যাংক, এটিএম বুথ, ফ্যাক্টরি, হাসপাতাল ইত্যাদিতে এই যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য প্রচুর খরচ পড়বে। এছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেক বেশি হবে। আবার প্রোগ্রাম সফ্টওয়্যার বারবার পরিবর্তন করারও প্রয়োজন পড়তে পারে।

সৃজনশীলতা হ্রাস :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে মানুষের সৃজনশীলতা হ্রাস পাবে। কারণ মানুষ তখন নিজে চিন্তা-ভাবনা না করে যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়বে।

বিপজ্জনক অস্ত্র নির্মাণ :

মনে করা হয় যখন এই যন্ত্রে নিজস্ব অনুভূতি প্রবেশ করানো হবে তখন নিজে নিজে বিপজ্জনক অস্ত্র নির্মাণ করতে সক্ষম হবে। তখন সেই অস্ত্র দিয়ে মানবজাতিকে শাসন ও শোষণ করতে পারে। এছাড়াও তা হতে পারে মানবজাতির ধ্বংসেরও কারণ।

অভিজ্ঞতা অর্জন হ্রাস :

সাধারণত মানুষ কোনো কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ও পরবর্তীতে আরও উন্নতভাবে কাজটি করতে পারে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র তা পারছে না। এটি তার ভেতরের সফটওয়্যারে যা প্রবেশ করানো আছে সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারে।

সঠিক ও ভুল বোঝে না :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্রগুলো ভিতরে থাকা প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ করে। কাজটি সঠিক নাকি ভুল হল সে সম্পর্কে কোনো ধারণা করতে পারে না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনায় বিজ্ঞানের উচিত এই ব্যবস্থাকে মানবকল্যাণে কীভাবে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তর গবেষণা করা। এছাড়াও এই ব্যবস্থার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল না হয়ে সুষমভাবে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।

তথ্যসূত্র : ওয়ানহিন্দি ডট.কম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড