• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘ঝরে যাওয়া তারা’

আছে শিশু অধিকার আইন, নেই বাস্তবায়ন

  এস এম সোহাগ

১২ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:২৯
পথশিশুদের অধিকার
মায়ের আঁচলে আর পিতার হাত মাথায় নিয়ে বেড়ে ওঠার বয়সে চেপে বসেছে ক্ষুধা নিবারণের তাড়না। ছবি : সিএনএন

অন্য অনেক মেয়ে শিশুর মতো পপিরও (৮) পুতুল খেলার বয়স, মনে আছে খেলার তীব্র বাসনাও। পপি পুতুল অনেক ভালবাসে, সে যেখানে যায় সেখানেই তার টেডি বিয়ারটি নিয়ে যায়, এমনকি ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে ময়লা সংগ্রহ করতেও সে তার পুতুলটিকে নিয়ে যায়। ‘পপির হৃদয়ের খুব কাছে আঁকড়ে ধরা পুতুলটি’ শিরোনামে ২০১৪ সালে এক আলোকচিত্রী প্রদর্শনীতে পপির ছবিটি তোলা চিত্রগ্রাহক শাহনেওয়াজ খান বলেন, ‘ছবিটা আমায় আহত করে একই সাথে করে অনুপ্রণিত ও’।

ময়লাস্তূপের ওপরে দাঁড়িয়ে বুকের মধ্যে পুতুল জড়িয়ে ধরে আছে ৮ বছর বয়সী শিশুশ্রমিক পপি। ছবি : শাহনেওয়াজ খান, সিএনএন

মাত্র ৮ বছর বয়সী পপি দৈনিক ৯-১০ ঘণ্টা করে কাজ করে, তার স্কুলে যাওয়ার সামর্থ্য নাই, আহার জুটাতে পুতুল খেলার বয়সে সে এক হাতে নিয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করার থলি, অন্যহাতে হৃদয়ের সঙ্গে চেপে ধরে আড়াল করে রেখেছে শৈশবের নির্মম জীবনের আঘাত থেকে নিজের শিশু মনটাকে। টেডি বিয়ারটাই তার খেলার সাথী, তার শৈশবের সব স্বপ্নকে ধারণ করে আছে, দরিদ্রের কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে যা আলো দেখার সুযোগ পায়না। পপি অর্থাভাবে স্কুলে যেতে পারেনা, যেখানে জীবন বাঁচাতে খাদ্যের যোগান পাওয়াই অনিশ্চিত সেখানে শিক্ষা কেবলই বিলাসী স্বপ্ন।

২০১৫ সালে মার্কিন সংবাদ সংস্থা ‘সিএনএন’ এ প্রকাশিত ‘দা “ফলেন স্টারস” অফ বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পপির মতো লাখো শিশু বাংলাদেশের পথে পথে জীবনীপাত করতে করতে নির্মম শৈশব পার করে।

জাদুর শহর ঢাকা, প্রাণের শহর ঢাকা। ঢাকায় রোজ কত স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আসে, কত স্বপ্নভঙ্গ মানুষ ঢাকা ছেড়ে চলে যায় তার হিসেব থাকেনা কারও কাছে। একটা হিসাব রেখেছে বেসরকারি এক দাতব্য সংস্থা, এই স্বপ্নচারী বা স্বপ্নভঙ্গ মানুষের না, তাদের তবুও স্বপ্নভেঙ্গে নীড়ে ফেরার উপায় থাকে। যাদের স্বপ্ন দেখার সাহস জন্মায় না, যাদের ফিরে যাওয়ার মতো থাকেনা কোনো আশ্রয়, যারা পথেই বেড়ে ওঠে, স্বজন থাকলেও যাদের অনেকেই জানেনা পিতামাতা, স্বজন কিংবা আপন জন বলতে কি বুঝায়, তাদের ভালবাসা অনুভব করতে কেমন বোধ হয়।

পথশিশুদের দৈনন্দিন জীবনের পরিচিত দৃশ্য। ছবি : সিএনএন

যে সব শিশু পিতৃ কিংবা মাতৃহীন বা উভয়হীন, মা তালাকপ্রাপ্ত কিংবা বাবা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত, মাদকাসক্ত কিংবা পিতা মাতা সংসার চালাতে পারছে না সেই সব ঘরের বাহিরে চলে আসে রাস্তায় বসবাস শুরু করে তাহাকে পথ শিশু বলে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোকই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। এরা সঠিক ভাবে শিশুদেরকে গড়ে তুলতে পারে না। তাদের সংসারে অভাব অনটন লেগেই থকে। তারা ছেলে-মেয়েদেরকে ঠিকমত খাবার ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার/সুযোগ-সুবিদা প্রদানে ব্যার্থ হয়।

ছিন্নমূল এসব শিশুরাই তখন জীবন সংগ্রামে নেমে বিভিন্ন কাজ-কর্মে জড়িয়ে পড়ে। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে : কুলি, হকার, রিক্সা শ্রমিক, ফুল বিক্রেতা, আবর্জনা সংগ্রাহক, হোটেল শ্রমিক, বুনন কর্মী, মাদক বাহক,বিড়ি শ্রমিক, ঝালাই কারখানার শ্রমিক ইত্যাদি। তাছাড়া বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ কাজে তাদেরকে নিয়োজিত করা হয়।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারা পথশিশু, জাদুর শহরের নিয়ন বাতির নিচে শক্ত কনক্রিটের ওপর মাথা রেখে জীর্ণ গাত্রখানি ফেলে ঘুমোয় ক্ষুধার্ত ছিন্নমূল শিশুরা। ছিন্নমূল শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনাদরে অবহেলায় মানুষ হচ্ছে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের দরিদ্র ও অসহায় প্রায় ১১ লাখের অধিক শিশু।

বিশ্বব্যাপী সিশুদের নিয়ে কাজ করা শিশু সংগঠন ‘সেভ দা চিলড্রেন’ এর ‘পৃথিবীর ভুলে যাওয়া শিশুরা’ শিরোনামে এক নিবন্ধে জানায়, পৃথিবির মোট শিশুর এক চতুর্থাংশ, প্রায় ১২০ কোটি শিশু যারা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিত্যাক্ত স্থানে বাস করে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০ কোটির বেশি শিশু কোন না কোনভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে যারা অতি দরিদ্র্য অঞ্চলে বসবাস করছে। প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে। বিশ্বব্যাপী দিনে ১৬ হাজার শিশু মারা যায়, প্রতি ৫ শিশুর মধ্যে ২ শিশু রোজ শিক্ষার অধিকার বঞ্চিত হয়ে স্কুল বিমুখ হয়ে যায়।

বিশ্বব্যপী শিশুদের এমন চরম বাস্তবতার মধ্যে সংগঠনটি বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে বৈষম্যের মাত্রা কমাতে পারার কারণে। তবে বাংলাদেশে শিশুদের জীবনে কি বৈষম্য কমেছে, একদম না। ঢাকা শহরের পথ চলতে এই বাস্তবতার প্রমাণ মিলবে। রাজধানীর বিভিন্ন বস্তি, রাস্তার ফুটপাত, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ইত্যাদিতে এদের বসবাস। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাজধানী ঢাকার একটি বড় সমস্যা পথশিশু। এসব পথশিশু পথে পথে থাকে। পথে বসবাসরত পথশিশুদের অনেকেই মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন। পথে কর্মরত পথশিশু যারা রাস্তায় জীবিকা নির্বাহ করে একটা নির্দিষ্ট সময়ে পরিবারে ফিরে যায়।

১১ বছর বয়সী রমজান, কমলাপুর স্টেশনেই থাকে, মাল বহন করে দিনে সর্বাধিক ৮০-১০০ টাকা পায়, তা দিয়ে খেয়ে প্লাটফর্মেই ঘুমুতে চেষ্টা করে। বহুবার তার ঘুম ভেঙেছে মার খেয়ে, তাই এখন ঘুমুতে গেলেই তার ভয় হয়। ছবি : গার্ডিয়ান

প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘দা গার্ডিয়ান’ এর ২০১৬ সালে 'আমি একা ঘুমাতে ভয় পাই : বাংলাদেশের রাস্তায় শিশুরা’ শিরোনামে প্রকাশ করা এক নিবন্ধে বাংলাদেশে পথশিশুদের নির্মম জীবনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে। বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি শিশু রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ শিশু সনদে বর্ণিত ঘোষণা অনুযায়ী ১৮ বয়সের কম বয়সী সকলেই শিশু। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৫ থেকে ৪৮ ভাগই শিশু। পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৬৬ লক্ষ (৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন) যা পৃথিবীর মোট শিশু শ্রমিকের ২ দশমিক ৬ অংশ। আমাদের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশই শিশু, যাদের বয়স ষোল বছরের কম। সমীক্ষায় দেখা যায়, এদের প্রতি ১০০ জনে ১৯ জন শিশু শ্রমিক। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হিসাব অনুযায়ী,২০১৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রাস্তায় শিশুর সংখ্যা ১১ লাখ ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশের জাতীয় শিশুনীতিতে শুধু ১৪ বছরের কম বয়সীদের শিশুধরা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের ১১ বছর পর্যন্ত বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক শিশু আবার ১৬ বছরের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়। আমাদের দেশে প্রচলিত কিছু আইনে ১৫ বছরের কম বয়স্কদের শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে প্যানেল কোড এর ধারা অনুযায়ী। শিশু নির্ধারণে বয়স সীমায় মত পার্থক্য থাকতে পারে। তবে তা কখনোই ১৮ বছরের উর্ধ্বে নয়।

কাজের সময় খেলার দায়ে শিশুশ্রমিককে মালিকের প্রহারের দৃশ্য। ছবি : সিএনএন

শিশু শ্রমিকদের বয়স ১০ থেকে ১৪/১৫ বছর। সেই ভোর থেকে কাজ শুরু হয়ে রাতের অনেকটা সময় জুড়ে ওরা কাজ করে। একটু ভুল হলেই মালিকের হাতে মার খেতে হয় । কখনো কখনো তাকে চাকরি হারাতে হয়। সারা দিনে কাজের ধরন বুঝে ২/৩ বেলা খাবার পায় এই শিশু শ্রমিকেরা। দিন শেষে ২০ থেকে ৫০/৬০ টাকা কিংবা মাস শেষে ৫০০/৬০০ টাকা পেয়ে থাকে। যা তাদের শ্রম এবং প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। মালিক পক্ষের কাছে কোনো দাবি তুললেই চাকরিচ্যুত হতে হয়। এভাবেই চলছে তাদের যাপিত কষ্টময় জীবন।

এই বিপুল সংখ্যক পথশিশুদের একটা বিশাল সংখ্যক অংশই জড়িয়ে পড়ে নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। অনেকে হয়ে ওঠে মাদকসেবী, ঝড়ে যায় বেড়ে ওঠার আগেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আমীর হোসেন বলেন, দেশে মোট মাদকাসক্তের ১০ শতাংশ শিশু। ছিন্নমূল শিশুরা ক্ষুধার জ্বালা, একাকিত্বের কষ্ট বা সঙ্গ দোষে তারা নানা ধরনের মাদক নিচ্ছে। এমন এক মাদক ড্যান্ডি। শাহবাগ এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্ক এলাকায় ঘুরে বেড়ানো এক পথশিশুর নাম সুজাত। সুজাত বলে, ‘ক্ষুধা লাগে। ড্যান্ডি খেলে ঝিমুনি আসে, ঘুম আসে। তখন ক্ষুধার কথা মনে থাকে না।’

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যমতে, পথশিশুদের ৮৫ শতাংশই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মাদকে আসক্ত। সংগঠনটির তথ্যানুযায়ী ঢাকা শহরে কমপক্ষে ২২৯টি স্পট রয়েছে, যেখানে ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরা মাদক সেবন করে। পথশিশুরা সাধারণত গাঁজা, ড্যান্ডি, পলিথিনের মধ্যে গামবেল্ডিং দিয়ে এবং পেট্রল শুঁকে নেশা করে। এ ছাড়া মিছিল-মিটিং, বিভিন্ন রাজনৈতিক শোডাউনে কিংবা হরতালের পিকেটিংয়ে অহরহ পথশিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে কিংবা একবেলা পেটপুরে খাওয়ার বিনিময়ে এসব দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছে শিশুরা। শোডাউন ছাড়াও পিকেটিং, ভাঙচুর কিংবা ককটেল নিক্ষেপের মতো বিপজ্জনক কাজেও ব্যবহার হচ্ছে এরা। কারওয়ান বাজারের পথশিশু সোলায়মান জানায়, কারওয়ান বাজার রেলগেটে মাদক বিক্রি হয়। সে এখান থেকে ভাঙারির বস্তায় মাদক ভরে তার পরিচিত বিক্রেতার কাছে দিয়ে আসে। প্রতিবার চালান দিয়ে সে ৮০ টাকা করে পায়।

ঢাকার ফুটপাথে পথশিশুর ক্ষুধার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মাদকগ্রহণ। ছবি : ওয়ার্ডপ্রেস

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘পথশিশুদের অনিশ্চিত ও অন্ধকার জীবনের কথা আমরা সবাই জানি। আমাদের মনুষ্যত্ববোধই পারে তাদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে। এখন দরকার যে যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা। তাহলেই পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব।’

জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শিশুর রয়েছে সমান অধিকার। কিন্তু এসব পথশিশুর নেই কোনো শিক্ষার অধিকার, স্বাভাবিক জীবনযাপনে মেলামেশার অধিকার নেই। ফলে এরা অপরাধ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। কাউকে সহজে বিশ্বাস করে না। ধ্বংসাত্মক কাজে আগ্রহ, নেতিবাচক আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পরিচয় ও ঠিকানা অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। অনেক সময় শিশুদের পিতা-মাতার নাম বলতে পারে না। ফলে তাদের জন্মনিবন্ধন করা যায় না। এসব শিশু ভবিষ্যতে নাগরিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হয়।

‘ইউনিসেফ’ এর ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘পথশিশুদের সুরক্ষা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জানায়, যদিও বাংলাদেশ শিশু অধিকার ও আইএলওর কনভেনশন ১৮২ অনুমোদন করেছে তবুও এখানে শিশুদের একটা বিশাল অংশ অত্যন্ত নির্মম জীবন যাপন করে। শিশুশ্রম প্রতিরোধের অনেক আইন থাকলেও এখানে শিশুশ্রম নিত্য ঝড়ে যাচ্ছে অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে।

ক্লান্ত শরীরের তৃষ্ণানিবারনের চেষ্টায় দেশের ভবিষ্যৎ। ছবি : সিএনএন

শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ, এ ধরনের বাক্য আমরা লেখায়, বক্তৃতায় হরহামেশা পড়ি ও শুনি। কিন্তু জাতির ভবিষ্যৎ সবাইকে, বিশেষ করে নিম্নবর্গীয়দের পথ শিশুদের নিয়ে আমরা মোটেই মাথা ঘামাই না।

দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে কিংবা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে এ পথ শিশুদের মূল্যায়ন করতে হবে যত্নসহকারে। তাদের দৈহিক ও মানসিক শক্তির সদ্ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে সমাজের মূল ধারায় পুনর্বাসিত করতে হবে। সরকারের উচিত পথ শিশুদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া। প্রতিটি পথ শিশুর জন্মনিবন্ধন করা। তবে এসব কাজ করা সরকারের একার পক্ষে হয়তো সম্ভব না, সে ক্ষেত্রে যে সংস্থাগুলো পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করছে সরকারের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। সরকারের পাশাপাশি ওই সংগঠনগুলো যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করে এবং এ পথ শিশুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাসহ শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য, বস্ত্র ইত্যাদির ব্যবস্থা করে, তাহলে এ পথ শিশুদের মধ্য থেকেও আমরা পেতে পারি অনেক ভালো কিছু।

মানবতার বিকাশ এবং জাতির বৃহত্তম স্বার্থে পথ শিশুদের শিক্ষা আবশ্যক। সচেতন থাকতে হবে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এরা যেন অল্প বয়সেই হারিয়ে না যায়। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানহীন শিশুরা যেন পরবর্তীকালে জাতির কাঁধে বোঝা না হয়ে বসে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা সকলেরই উচিত। পথ শিশুদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শিশুর রয়েছে সমান অধিকার।

মানুষের অধিকার নিয়ে লিখবে অধিকার; লিখুন আপনিও। আপনার চারপাশে অধিকার বাস্তবায়নে আপনিও সচেষ্ট হোন, জানান সরাসরি দৈনিক অধিকারকে [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড