• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সহিংসতায় আক্রান্ত শিশুদের শিক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ৩ প্রস্তাব

  অধিকার ডেস্ক    ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:০৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছবি : সংগৃহীত

সহিংসতায় আক্রান্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে শিশু শিক্ষার চাহিদা মোকাবেলায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সভাকক্ষে ‘নারী ও মেয়েশিশু শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন সেখানে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেয়ার সময় মিয়ানমারে বিনিয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে রোহিঙ্গা শিশুরা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে শিক্ষার অধিকারসহ অন্যান্য শিশু অধিকার ভোগ করতে পারে।

রোহিঙ্গা শিশুদের মানসিক দিক বিবেচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথমত, আমাদেরকে বুঝতে হবে যে সংঘাত, জাতিগত নিধন ও গণহত্যার ঘটনায় পালানো এসব শিশু প্রচণ্ড রকমের মানসিক আঘাত বহন করছে। তাদের মনো-সামাজিক চাহিদার বিষয়টি আমাদেরকে দেখতে হবে।’

শিশুদের বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয়ত, ‘সংঘাত ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ ঘটনায় পালিয়ে আসা এসব শিশু কোন সাধারণ বিদ্যালয়ে নিজেদের অভ্যস্ত করতে পারবে বলে প্রত্যাশা করা যায় না। ‘সুতরাং, তাদের জন্য অনানুষ্ঠানিক ও জীবনধর্মী বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করা জরুরি।’

রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগতভাবে শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৃতীয়ত, ‘জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গা শিশুরা বর্তমানে ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে বসবাস করছে। এসব শিশুকে নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগতভাবে শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের শিক্ষা তাদের প্রকৃত পরিচয় ধরে রাখতে সহায়তা করবে।’ এ শিক্ষা এক সময় তাদের দেশে ফিরে তাদের জীবনকে এগিয়ে নিতেও প্রস্তুত করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিশুদেরকে শিক্ষা প্রদানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

সারাবিশ্বের বহু মানুষ সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়ছে, এ ধরনের চরমপন্থা লোকজনকে তাদের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাড়ে ৬ কোটির বেশি মানুষ বর্তমানে গৃহহীন রয়েছে এবং প্রতিদিন এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।’

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এসব শরণার্থী এবং জোরপূর্বক বিতাড়িত হওয়া মানুষের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও জটিল। তারা ভীত সন্ত্রস্ত, সর্বস্বান্ত এবং সহিংসতা ও পাশবিকতার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা বহন করছে। এসব সম্প্রদায়ের বহু লোক তাদের জন্মভূমিতে দশকের পর দশক ধরে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।’

বাংলাদেশকে একটি শান্তি-প্রিয় দেশ হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহিংসতা, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন। দুর্ভাগ্যবশত আমরা অন্য দেশের সহিংসতার ধকল বহন করছি। বর্তমানে বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমারের ১১ লাখের বেশি নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারে সহিংসতা ও গণহত্যার ঘটনায় তারা দেশে থেকে পালিয়ে এসেছে। সেখানে তারা কয়েকশ বছর ধরে বসবাস করছিল।’

তিনি বলেন, ‘তারা তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও চলাফেরার স্বাধীনতার অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনকি তাদের নাগরিকত্ব হরণ করা হয়েছে।’

মিয়ানমারে নৃশংসতার কারণে তারা পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশ তাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ‘চরম সংকটকালে আমাদের দেশের জনগণ তাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে এবং নিজেদের খাদ্য ভাগাভাগি করে খেয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫৫ শতাংশ শিশু। ‘এসব রোহিঙ্গা শিশুকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানে ইউনিসেফের সাথে অংশীদারিত্বে এক হাজার ১০৬টি শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এসব কেন্দ্র এক লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে মনো-সামাজিক সহায়তা এবং জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আরও নতুন শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় এবং শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড