সাহিত্য ডেস্ক
রেললাইনের ধারে বস্তির সার সার ঝুপড়ির শেষেরটাতে, ছোট্ট ডোবাটার পাশে সুখমণির মাথা গোঁজার ঠাঁই। সবুজ পানায় ঢাকা নোংরা ডোবাটা ব্যবহার করে না কেউ। জোঁকের উৎপাত সামলাতে নুন রাখে হাতের কাছে সুখমণি। তিন হাত বাই তিন হাত ঘরটায় অবশ্য হাতের কাছেই সবকিছু। এর ওর বাড়ি কাজ করে চলে যায় কোনোরকমে, চলে না শুধু যেন সময়। ষাটোর্ধ সুখমণির তেল ফুরিয়ে আসা লণ্ঠনের নিভু নিভু আলোটার দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে একসময় মনে হয় ছেলেটা পাশে এসে বসেছে যেন। কাঁদছে বিনবিনিয়ে। থেঁতলানো মুখটা রক্তে, লালায় একাকার। হাতে, পিঠে, পায়ে - সারা গায়ে পাথরের, জুতোর, লাঠির মারের চিহ্ন। বিড়বিড় করে একটানা সুরে বলতেই থাকে জিতু, ‘মাঈ, ম্যায় চোর নেহি হুঁ’, ‘মাঈ, ম্যায় চোর নেহি হুঁ’...
বস্তির ছেলেগুলো খেলাধূলো, মারপিট, ঝগড়া শেষ হলে শেষবেলায় লাফাতে লাফাতে আসে পুরো মজাটা লুটে নেবার তাগিদে। দূর থেকে দাঁত বের করে চেঁচিয়ে বলে, ‘সুখি কা বেটা চোর হ্যায়!’
চেঁচিয়ে শাপশাপান্ত করে সুখমণি, ছুটে যায় ছেলেগুলোর দিকে। ঠান্ডা জল ছুঁড়ে দেয় কখনো, শুকনো চোখ দিয়ে হলকা বেরয় তখন তার।
জল ফুটছে ছোট্ট মাটির উনুনে। একমুঠো নুন ফেলে দেয় তাতে সুখমণি। আসুক জোঁকগুলো আজ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড