• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বুক রিভিউ

আফ্রিকার পরাধীনতা এবং অনুন্নয়ন

আমিনুল মোহায়মেন

  সাহিত্য ডেস্ক

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৩৪
How Europe Underdeveloped Africa

আফ্রিকার পরাধীনতা এবং অনুন্নয়ন নিয়ে `How Europe Underdeveloped Africa ' এই বইটি সর্ব প্রথম একটি ভিন্নধর্মী বিশ্লেষণ তুলে ধরে, যা পশ্চিমা বুদ্ধিজীবী মহলের প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়ে। গায়ানার ইতিহাসবিদ লেখক ওয়াল্টার রডনি ১৯৭২ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সে বইটি প্রকাশ করেন। ১৯৮০ সালে লেখক আততায়ীর হাতে নিহত হন।

প্রথম অধ্যায়ে রডনি underdevelopment-কে সজ্গায়িত করার চেষ্টা করেছেন। তার মতে:

১. উন্নয়ন বা অনুন্নয়নের বিষয়টি হচ্ছে তুলনামূলক। আফ্রিকা, এশিয়া এবং ল্যাতিন আমেরিকা অনুন্নত ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও আরও কয়েকটি শিল্পোন্নত দেশের তুলনায়।

২. কোনো দেশ অনুন্নত- তার মানে শুধু এই নয় যে সেই দেশটি অন্য একটি দেশের তুলনায় অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল। বরং এর সাথে অর্থনৈতিক শোষণের একটি সম্পর্কও রয়েছে। যে দেশ অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করতে পারে, সে উন্নত হয়, যাকে শোষণ করা হয় সে অনুন্নত হতে থাকে।

এই অধ্যায়ে লেখক মার্ক্সীয় তত্ত্ব দিয়ে তিনি উন্নয়নের বিভিন্ন ধাপ ব্যাখ্যা করেছেন। মানুষ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করার পরের ধাপে যখন দলবদ্ধভাবে বাস করা শুরু করল, তখন সম্পদের সমবেত অধিকার ছিল, ছিল সমবণ্টন। তার পরের ধাপে এলো দাস প্রথা এবং সামন্তবাদ, যখন কৃষিই ছিল মানুষের প্রধান জীবিকা আর তার জন্য আবশ্যকীয় জমি থাকত গুটি কয়েক মানুষের হাতে। তারপর দেখা গেল পুঁজিবাদ এবং সমাজবাদ।

উপনিবেশপূর্ব যুগে, ১৫ শতকে আফ্রিকা কতটা উন্নত ছিল দ্বিতীয় অধ্যায়ে লেখক সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি মিসর, ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে, মাগরিব (মরক্কো, আলজেরিয়া, লিবিয়া, তিউনিসিয়া) ও পশ্চিম সুদানের উদাহরণ টেনেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে, আফ্রিকার এই সমস্ত দেশে সে সময় খুব উন্নত ধরনের শাসন ব্যবস্থা চালু ছিল। ধর্মীয় দিক থেকেও তারা ছিল তৎকালীন ইউরোপ থেকে অনেক উন্মুক্ত ও গোঁড়ামিমুক্ত। বিজ্ঞান চর্চায়ও তারা ছিল অগ্রগামী।

উপনিবেশপূর্ব আফ্রিকা এতো উন্নত ছিল যে আফ্রিকার মুরেরা (তৎকালীন মাগরিবের অধিবাসী) ইউরোপের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ (স্পেন) জয় করে, সেখানে স্থাপত্য শিল্পের বিপুল উৎকর্ষ সাধন করে।

তৃতীয় অধ্যায়ে রডনী দেখিয়েছেন কীভাবে উপনিবেশ আমলে আফ্রিকা ইউরোপের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। প্রথমে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে ইউরোপ তৎকালীন বিশ্ব বাণিজ্যে প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। মূলত, সাগরে তার সামরিক আধিপত্যকে ব্যবহার করে। তারপর দেখিয়েছেন, আফ্রিকা থেকে সম্পদ নিয়ে গিয়ে ইউরোপে ঢালা হয়েছে, যা সেখানে পুজিবাদী ও শহরকেন্দ্রীক অর্থনীতির বিকাশ ঘটিয়েছে। এ ক্ষেত্রে অন্য সম্পদের পাশাপাশি আফ্রিকার মানবসম্পদ বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সে সময় ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের সূচনা হয়েছে। প্রয়োজন হচ্ছিল প্রচুর সস্তা শ্রমিকের। আফ্রিকার শক্তিশালী শ্রমিকদেরকে তারা নামমাত্র মজুরিতে কাজে লাগিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মজুরি এতো কম ছিল যে, শ্রমিকদের খেয়ে পড়ে বাঁচাও কষ্টকর ছিল।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড