• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘হিমালয় কন্যা’ খ্যাত অনিন্দ্যসুন্দর প্রাচীন দেশ : নেপাল

  লামিয়া আলভী

০৯ অক্টোবর ২০১৮, ১১:১১
ছবিসূত্র : ইন্টারনেট

হিমালয়কে আগলে রাখা দেশ ‘নেপাল’। প্রাকৃতির সৌন্দর্যে যে দেশ জড়িয়ে পুরোটাই। নেপাল নামের উৎপত্তি নে (পবিত্র) এবং পাল(গুহা) শব্দ দু’টি থেকে। যার অর্থ ‘পবিত্র গুহা’।

নেপাল অনেকটা স্যান্ডুইচের মতো চীন এবং ভারতের মাঝখানে অবস্থিত। পৃথিবীর দ্বিতীয় আমাজান বলা হয়ে থাকে এ দেশকে। প্রাকৃতিক দিক থেকে খুবই বিচিত্র একটি দেশ এটি। এখানে রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ "মাউন্ট এভারেস্ট"। নেপাল আরেকটা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো নেপালের লুম্বিনিতে জন্মেছিলেন বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ।

নেপাল সম্পর্কে কিছু তথ্য-

ভূখণ্ড : ১,৪৭,১৮১ বর্গ কি.মি. রাজধানী : কাঠমুন্ডু রাষ্ট্রীয় ভাষা : নেপালি মুদ্রা : নেপালি রুপি জনসংখ্যা : ২,৩১,৫১,৪২৩ জন। যার মধ্যে ৮১ শতাংশ হিন্দু, ৯ শতাংশ বুদ্ধ, ৪ শতাংশ মুসলিম এবং ৬ শতাংশ অন্যান্য। রাষ্ট্রপতি : বিদ্যা ভন্ডারী প্রধানমন্ত্রী : কে পি ওলি শিক্ষার হার : ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ গড় আয়ু : ৬৬.১৬ বছর

নেপালকে ১৪টি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে, সেগুলো আবার ৭৫টি জেলায় বিভক্ত।

নেপাল কখনো কোনো পরাশক্তির অধীনে ছিলো না তাই তারা বিজয় দিবস পালন করে না, তবে গণতন্ত্র দিবস পালন করে। ২০০৮ সাল পর্যন্ত নেপাল রাজতন্ত্র ছিল, এরপর গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বিশ্বের সব দেশের পতাকা আয়তাকার হলেও একমাত্র নেপালের পতাকা ত্রিভুজাকৃতির। এর রক্তিম বর্ণ নেপালের জাতীয় ফুল "রডোডেনড্রন" ফুলের প্রতীক। এদেশে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই তাই কলকাতা বন্দর ব্যবহার করে। নেপাল ভূমিকম্প প্রবণ দেশ। ২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।

নেপালের অর্থনীতি মূলত পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক বছর হাজারো পর্যটক ভ্রমণ করেন এই পাহাড়ি কন্যার দেশে।

নেপালের সংস্কৃতি অনেকগুলো দেশীয় আদিবাসী গোষ্ঠীর সংস্কৃতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে "নেওয়ার" জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি তাদের গান ও নাচের জন্য সুপরিচিত।

নেপালের সাধারণ খাদ্যতালিকায় রয়েছে ডাল, ভাত, তরকারীর সাথে আচার বা চাটনী।

ভ্রমণপিপাসু এবং যারা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাদের জন্য নেপাল সবচেয়ে পছন্দের তালিকাভুক্ত একটি দেশ। অক্টোবর ও নভেম্বর নেপালের শুষ্ক মৌসুম । আকাশ থাকে পরিষ্কার আর গ্রেট হিমালয় তার অপার রূপ মাধুর্য মেলে ধরবে আপনি যতটা চেয়েছেন তার চেয়ে বেশি।

মাউন্ট এভারেস্ট :

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ২৯ হাজার ২৯ ফুট। স্যার জর্জ এভারেস্টের নামে পর্বতটির নামকরণ করা হয়েছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বত জয় করার ইচ্ছা না থাকলেও ঘুরে আসতে পারেন মাউন্ট এভারেস্টের বেস ক্যাম্প থেকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৩৬৪ মিটার উঁচুতে এ বেস ক্যাম্প। এভারেস্ট জয়ের কিছুটা স্বাদ হয়তো পেয়ে যাবেন বেস ক্যাম্পে গিয়ে।

নাগরকোট :

নাগরকোট কাঠমুন্ডু থেকে ৩২ কি.মি. পূর্বে, যেখান থেকে হিমালয়ের জমকালো সূর্যদোয় দেখা যায়। নাগরকোট গ্রাম পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু স্থানে অবস্থিত। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের গ্রামে বসবাসকারী মানুষ মাঠ থেকে আকাশ দেখে। এখানে গেলে আপনি নিচে তাকিয়ে আকাশ দেখতে পারবেন।

পোখারা :

পোখারাকে বলা হয় "হেভেন অফ দ্যা নেপাল"। নেপালের জনপ্রিয় অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র পোখারা। পোখারার ফেউয়া লেকে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ তুলনাহীন। অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিটিস এর জন্য পোখারা বেস্ট। বাঞ্জি জাম্প, জিপ ফ্লাইং, প্যারা গ্লাইডিং, রিভার রাফটিং। তবে যাদের হাইট ফোবিয়া (উচ্চতা ভীতি) আছে তারা বাঞ্জি জাম্প থেকে বিরত থাকবেন।

"ডেভিস ফলস" নেপালের অন্যতম প্রাকৃতিক ঝর্ণা। ৫০০ মিটার দীর্ঘ এবং ১০০ মিটার গভীর এ ঝর্ণা পর্যটকদের আরেকটি মূল আকর্ষণ। এছাড়া ট্র্যাকিং এর জন্য জনপ্রিয় "অন্নপূর্ণা”। শীতে কেবল অতিরিক্ত বরফের জন্য মাঝেমাঝে ট্র‍্যাকিং বন্ধ থাকে।

এছাড়া গোল্ডেন গেইট, লুম্বিনী, ভীমসেন টাওয়ার, ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামসহ আরও বেশকিছু আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

ভারতীয় এবং বাংলাদেশীদের জন্য নেপাল ভ্রমণে আলাদা ভিসা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। নেপাল পৌঁছালেই পেয়ে যাবেন অন অ্যারাইভাল ভিসা। এই ছিল নেপাল নিয়ে জানা অজানা কিছু তথ্য। সময় সুযোগ করে ঘুরে আসতে পারেন হিমালয়ের দেশ নেপাল থেকে।

দেশ কিংবা বিদেশ, পর্যটন কিংবা অবকাশ, আকাশ কিংবা জল, পাহাড় কিংবা সমতল ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা অথবা পরিকল্পনা আমাদের জানাতে ইমেইল করুন- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড