• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঘুরে আসুন '২০১ গম্বুজ মসজিদ'

  ডা. মোঃ সাইফুল ইসলাম

০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৫৮
২০১ গম্বুজ মসজিদ
২০১ গম্বুজ মসজিদ

ভ্রমণ মানুষের মনে আনন্দ যোগায়। এটি মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে। এজন্যই আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন মনীষী জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি মনকে সজীব রাখতেও নানা স্থান ভ্রমণ করেছেন। কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে নিয়মিত সকলের নানা স্থানে ভ্রমণ করা উচিত। ভ্রমণের জন্য প্রথমে বিদেশই হয়ত সকলের পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে। কিন্তু দেশেরও অনেক স্থান ও স্থাপনা রয়েছে যেগুলো বিদেশের চেয়ে কোনো অংশে কম হয় না। এমনই একটি স্থাপনা হচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামের ‘২০১ গম্বুজ মসজিদ’।

গম্বুজের সংখ্যা শুনে অবাক লাগছে? তবে সংখ্যাটি কিন্তু সামান্যও বাড়িয়ে বলছি না। বাস্তবেই মসজিদটির গম্বুজ হচ্ছে ২০১টি। আর গম্বুজের সংখ্যা থেকেই নামকরণ করা হয়েছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি মসজিদটি উদ্বোধন করেন রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের মাতা মিসেস রিজিয়া খাতুন।

২০১ গম্বুজ মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। এত পরিমাণ টাকা ব্যয় করার মানসিকতা যার, নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর প্রতিষ্ঠাতার সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানা উচিত।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর নির্বাচিত সিবিএ প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চান না মৃত্যুর সময় ১ হাজার টাকাও তার ব্যাংক একাউন্টে জমা থাকুক। তাই তিনি তার সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ট্রাস্টে দান করে দিয়েছেন। পাশাপাশি মসজিদের দক্ষিণপাশে নিজের কবরের স্থান নির্মাণ করে রেখেছেন।

গম্বুজের সংখ্যায় বিশ্বের এত সংখ্যক গম্বুজ আর নেই। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী মসজিদটির নির্মাণ কাজ দেখতে আসেন। দর্শনার্থীরা ছাদে উঠে গম্বুজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। ঠিক মাঝখানে দেখতে পান ৮১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বড় একটি গম্বুজ। এর চারদিকে রয়েছে ১৭ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চারকোণায় দেখা যায় ১০১ ফুট উচ্চতার ৪টি মিনার। এছাড়াও ৮১ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট আরও ৪টি মিনার থাকায় মোট মিনার সংখ্যা দাঁড়ায় ৮টি। মিনারগুলোর নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্বিতল এই মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৪৪ ফুট এবং প্রস্থও ১৪৪ ফুট। এই মসজিদে একইসাথে ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে।

মসজিদের পশ্চিম পাশেই রয়েছে ঝিনাই নদী। নদী থেকে মসজিদে একটি সিঁড়িও করা হবে। মসজিদের চারপাশে থাকবে ফুলের বাগান ও দেশি বিদেশি পর্যটকের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তৈরি হবে হ্যালিপ্যাড।

কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক ধর্ম গবেষণা কেন্দ্র, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পুনর্বাসন প্রকল্প, বেকার যুবকদের কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা, মাতৃসদন হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা ইত্যাদি নির্মাণেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসকল কাজের জন্য ১৫ একর জমি বরাদ্দ করতে হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ ২০১৭ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও মসজিদটির অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তথাপিও যতটুকু নির্মিত হয়েছে ততটুকু দেখলেও আপনার মনে নতুন কোনো আবেগ ও চিন্তার জন্ম হবে। মন হয়ত চাইবে ক্ষণস্থায়ী জীবনের জন্য হাজার হাজার টাকা না জমিয়ে মানব কল্যাণে ব্যয় করতে।

যেভাবে যাবেন : যে কোনো স্থান থেকে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর, মধুপুর ও ধনবাড়ি উপজেলায় আসা যাবে। আবার ঢাকা থেকে ট্রেনে জামালপুর গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে ধনবাড়ি যাবেন। সেখান থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগেও যেতে পারবেন।

ধনবাড়িতে পৌঁছার পর সেখানে ‘ধনবাড়ি জমিদার বাড়ি’ দেখার সুযোগ নিতে ভুল করবেন না। অপরদিকে মসজিদ দেখার পর সেখান থেকে অটোরিকশাযোগে ডগা বিল দেখতে যাওয়ার সুযোগও হাত ছাড়া করবেন না। ডগাবিলে অসংখ্য জলজ পাখি, বিস্তৃত জলরাশি ও ছোট ছোট নৌকা দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য আপনার ভ্রমণ আনন্দকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

ছবি : আরিফুল ইসলাম

তথ্যসূত্র : 201gombujmasjid.org/bn

দেশ কিংবা বিদেশ, পর্যটন কিংবা অবকাশ, আকাশ কিংবা জল, পাহাড় কিংবা সমতল ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা অথবা পরিকল্পনা আমাদের জানাতে ইমেইল করুন- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড