অধিকার ডেস্ক ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:১৮
মোবাইলে ভুল নাম্বারে ফোন দিল কিশোর। ওপাশ থেকে এলো কোকিল কণ্ঠের এক মেয়ের আওয়াজ। ততক্ষণে ১৫ বছরের সেই কিশোরটি পুরোপুরি প্রেমে পড়ে গেল নাম পরিচয়হীন সেই কোকিল কণ্ঠির।
টানা এক মাস যাবত মোবাইলে চলে তাদের প্রেমের পর্ব। এর পর কিশোরের জেদে আসে তাদের দেখা করার পালা। তবে সেই কোকিল কণ্ঠির দাবি, দেখা করলে কিন্তু বিয়েও করতে হবে। কিশোর তো এক পায়ে খাড়া।
এদিকে দুরু দুরু বুকে কিশোর ছেলেটি তার প্রেমিকার সঙ্গে প্রথমবারের মত দেখা করতে যায়। প্রেমিকার পরিবারের আবদার, আগে খাওয়া দাওয়া হয়ে যাক, পরে মেয়ে দেখা। পেটভরে ভাত, শেষ পাতে তেলাপিঠে খেয়ে কিশোর ‘স্বপ্নের রাজকন্যা’ দেখতে পুরোপুরি প্রস্তুত। হঠাৎ ঘোমটা টেনে ঘরে প্রবেশ করলেন ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা।
ফোনের ওপারে যার কোকিল কণ্ঠে এতদিন মজেছিল ভারতের আসাম রাজ্যের গোয়ালপাড়া জেলার শিমলিতোলা এলাকার হেপচাপাড়া গ্রামের ১৫ বছরের সেই কিশোর। এবার তাকে দেখেই কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
সে সময় পালানোর বৃথা চেষ্টাও করেছিল সেই কিশোর। ছেলের অভিযোগ, কন্যাপক্ষ একরকম জোরপূর্বক সেই পতিহীনার সঙ্গেই কিশোরের বিয়ে দিয়েছে। পরে নববধূ নিয়েই বাড়ি ফিরে যায় সে। বউয়ের বয়স শাশুড়ির থেকেও অনেক বছর বেশি! অর্থাৎ ছেলের নানীর বয়সী। নতুন বউয়ের দাবি, ‘কাজী আমাদের বিয়ে দিয়েছেন। আর তাই আমি স্বামীর ঘরেই থাকব।’
এ বিষয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করা কিশোর জানায়, মাস খানেক আগে বঙাইগাঁওয়ে একজনকে ফোন করতে গিয়ে ভুল নম্বরে কল চলে যায় বরপেটা জেলার সুখারচর গ্রামের বাসিন্দা সেই বৃদ্ধ নারীর মোবাইলে। সেই শুরু, সম্পর্ক দিনে দিনে আরও ঘনিষ্ঠ হতে থাকে। এ দিকে কিশোর বারংবার দেখা করতে চাইলে ফোনের ওপাশ থেকে জানায়, দেখা করলে একেবারে বিয়ে করতে হবে।
পরে গত মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) এসব সর্ত মেনে নিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে যায় কিশোর। পরে বাড়ির লোক কাজী ডেকে সেই বৃদ্ধার সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থা করে। ঘটনা চাউর হতেই ‘নতুন বৌ’ দেখতে আশপাশের গ্রামের লোক বাড়িতে ভিড় জমায়। বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ছেলেটি। বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না নববধূও।
এই বিয়েটি পুরোপুরি মানতে নারাজ নাবালক সেই ছেলেটির পরিবারসহ গ্রামের প্রতিটি মানুষ। বিষয়টির নিষ্পত্তিতে এগিয়ে এসেছে অল আসাম মুসলিম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আমসু)। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বর্ণালী ডেকা বলছেন, ‘এখনও পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। আইন মেনেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জোরপূর্বক কিশোর ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে চাইল্ড লাইন বিষয়টি রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছেও জানিয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড