আহমেদ উল্লাহ ইউসুফ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিষ্ঠার একযুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও পাওয়া না পাওয়ার অঙ্কে, না পাওয়ার পাল্লাটাই ভারী। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় মানে আলাদা লাইব্রেরি ভবন, মেডিকেল সেন্টার, জিমনেশিয়াম, সংগঠনগুলোর অফিসের জন্য আলাদা ভবনসহ সকল ক্ষেত্রে আলাদা কার্যক্রম থাকবে। সেখানে এই ক্যাম্পাসের অাংশিক অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমসহ সবকিছু চলছে স্বল্প পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনকে কেন্দ্র করে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন লালমাইয়ের এ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা। যা নিয়ে তাদের মাঝে রীতিমতো হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তবুও বর্তমান উপাচার্যের দিকে তাকিয়ে আশা ছাড়তে নারাজ তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন পাঁচ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবনটিকেই কেন্দ্র করে চলছে সকল কার্যক্রম। এই ভবনেই উপাচার্যের কার্যালয়, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর অফিসসহ রয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, অর্থ ও হিসাব দপ্তর, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর, প্রকৌশল দপ্তর, আইকিউএসি সেল, শরীরিক শিক্ষা কার্যালয়, জনসংযোগ দপ্তর, অ্যাস্টেট শাখা, নেটওয়ার্ক ও আইটি সেল, নিরাপত্তা শাখা।
এছাড়াও এ ভবনে নিচ তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য রয়েছে জনতা ব্যাংকের একটি শাখা। রয়েছে পোস্ট অফিস, এ ভবনেরই পাঁচ তলায় স্বল্প পরিসরে ছয় হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে দুই কক্ষে মাত্র ৯০ আসন নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। রয়েছে কম্পিউটার ল্যাব, নিচ তলায় মাত্র এক কক্ষবিশিষ্ট মেডিকেল সেন্টার, একটি ভার্চুয়াল রুম, শিক্ষক লাউঞ্জ, বিএনসিসি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্লাটুন অফিস, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) কার্যালয়, কর্মকর্তা পরিষদের কার্যালয়সহ, রয়েছে একটি হল রুমও। এমনকি শ্রেণিকক্ষের কাজও চলে পাঁচ তলা বিশিষ্ট এই প্রশাসনিক ভবনটিতে।
এ দিকে সব কিছু স্বল্প পরিসরে ও অপ্রতুল সুবিধা সম্বলিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার যে সুবিধা পাওয়ার কথা তা থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তাদের মঝে সবসময় ক্ষোভ ও হতাশা লক্ষ করা যায়। এতে করে একদিকে আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম যেমন ব্যাহত হচ্ছে সেই সাথে শিক্ষার্থীরাও চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
লোক প্রশাসন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ এতে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমারদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স একযুগ শেষ হলেও আমাদের মৌলিক প্রয়োজনীয় যা থাকা দরকার, তেমন কিছুই নেই। লাইব্রেরি থেকে শুরু করে ক্লাশ রুম, সবখানেই আমাদের স্বল্পতা। আশাকরি প্রশাসন আলাদা ভবনে গ্রন্থাগার, অডিটরিয়াম এবং অন্যান্য প্রশাসনিক স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে প্রশাসনিক ভবন থেকে অফিসের জটলা কমাবেন।’
গণিত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল রূপক বলেন, ‘অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর বাড়িয়ে এবং পৃথক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করবে বলে আমরা আশাবাদী।’
ছাত্রদের জন্য শিক্ষার মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ আছে কি না এমন প্রশ্নে উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সর্বদা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই তাদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে যে কোনো সমস্যা সাদরে গ্রহণ করছি এবং প্রতিনিয়তই তা সমাধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। পরবর্তী সময়ে আলাদা ভবন নির্মাণের মাধ্যমে প্রশাসনিক ভবন থেকে জটলা কমানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড