• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মোস্তফার জাদুর কেটলিতে এ কেমন চা!

  আরেফি রিয়াদ

২২ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৪১
ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা পাঠান
দোকানে চা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা পাঠান

বাঙালির হাতে চায়ের কাপ উঠেছে বড়জোর ৩শ বছর আগে। আর এই ৩শ বছরে শহর-বন্দর ও গ্রামগঞ্জে প্রতি মাইলে একটি চা এর দোকানের দেখা মিললেও সব চায়ের দোকান বিখ্যাত হয়ে উঠতে পারে না। পারে না ঐতিহ্য ধরে রাখতে। পারে না প্রজন্মের মন জয় করতে।

কিন্তু সবগুলোই করতে সফল হয়েছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার কামারখাড়া ইউনিয়নের মো. মোস্তফা পাঠান। তার এই চায়ের দোকানের কারণে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে কামারখাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত আদাবাড়ি বাজার। এই বাজারে দূরদূরান্ত থেকে আসা চা প্রেমীদের মূল উদ্দেশ্য মো. মোস্তফা পাঠানের ধোঁয়া ওঠা স্পেশাল মালাই চা ও পাতি চা এর কাপে একটি চুমুক দেওয়া ।

এছাড়াও দেখতে আসেন জাদুর কেটলি নামে পরিচিত মো.মোস্তফা পাঠানের চায়ের কেটলি। ১৯৮১ সালে প্রতি তোলা ( প্রায় ১১.৬৪ গ্রাম) এক আনা (১৬ আনা = ১টাকা) দরে চায়ের কেটলি ক্রয় করেন তিনি। তখন চায়ের কেটলির ওজন ছিল ৮০ তোলা (প্রায় ৯৩১ গ্রাম)। মোট দাম ৮০ আনা (৫ টাকা)। ৩৭ বছর পর তার চায়ের কেটলির বর্তমান ওজন ৩৭ তোলা (৪৪০ গ্রাম) প্রায়। চায়ের কেটলির ওজন এত কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে চা খেতে আসা অনেকেই বলে ওঠেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা একমাত্র কারণ।

মৃত ইয়াছিন পাঠানের ছেলে মো.মোস্তফা পাঠান (৬৫) ১৯৮১ সালে প্রথম ১ কেজি গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে তার দোকান শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তার চায়ের সুনাম ও খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দিন দিন তার চা তৈরি বাড়াতে হয়। বর্তমানে তিনি বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত চা বিক্রয় করতে গরুর ২০ কেজি দুধ প্রয়োজন হয় বলে জানান তিনি ।

চা প্রেমি মো.শরিফ জানান, আমরা কয়েকজন বন্ধু তার দোকানে প্রতিদিন চা খেতে আসি । ওনার (মো. মোস্তফা পাঠান) চায়ের মধ্যে আলাদা একটি স্বাদ খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও ওনার দোকান ও চা তৈরিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা লক্ষ করা যায়। ওনার সবচেয়ে ভালো গুণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা।

আরেক চা প্রেমি মো. বিপ্লব হালদার জানান, ওনার (মো.মোস্তফা পাঠান) ছেলেরা ওনাকে চা বিক্রয় করতে মানা করেন। মাঝে মাঝে দোকানে তালা দিয়ে দেন। কিন্তু স্থানীয় ও চা প্রেমিরা মো. মোস্তফা পাঠানের সন্তানদের অনুরোধ করে দোকান চালু করান। চা প্রেমিদের ভালোবাসায় বর্তমানে তিনি চা বিক্রয় করে থাকেন।

এ বিষয়ে চা বিক্রেতা মো. মোস্তফা পাঠান বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে চা বিক্রয় করে আসছি সুনাম সহিত। চা বিক্রয় করে আমার ৫ ছেলে ও ৩ মেয়েকে মানুষ করেছি । মেয়েরা পড়াশুনা করছেন আর ছেলেরা ঢাকায় ব্যবসা ও দোকানপাঠ দেখাশোনা করেন। আমি চা বিক্রয় করে চা প্রেমিদের মন জয় করতে পেরে আমি নিজকে নিয়ে গর্বিত মনে করি।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এটা তো আপনারাই দেখতে পারছেন। আমি যে দিন কোনো কারণে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করতে না পারি সে দিন দোকান বন্ধ রাখি। ৩৭ বছর ধরে চা বিক্রয় করি কিন্তু এখনও আমার চায়ের কেটলি ও দুধের পাত্রে কোনো রকম কালচে দাগ পড়েনি। এখনও নতুনের মত দেখায়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড