এম. ইমরান হোসাইন
সাদিয়া আফরোজের বাবা মারা গেছেন প্রায় ৮ বছর আগে। মৃত্যুর আগে রাজমিস্ত্রি কাজ করে সংসার চালাতেন। বড় ভাইয়ের আয়ের উপর নির্ভর করে চলত অভাব অনটনের সংসার। বইপত্র কেনার সামর্থ্যও ছিল না সাদিয়ার।
আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতা নিয়ে করতে হয়েছে লেখাপড়া। ‘বিদ্যুতের বিল বেশি আসার ভয়ে ঘরে অনেক সময় বেশিক্ষণ আলো জ্বালিয়ে পড়া সম্ভব ছিল না। মাঝে মধ্যে কুপি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে হতো। অনেক সময় তেলের অভাবে কুপিও জ্বালানো যেত না। টিফিন ছুটিতে না খেয়েই থাকতে হতো। তবু ভেঙে পড়িনি সাদিয়া।’
সে এখন ডাক্তার হয়ে দেশের মানুষের সেবার করার লক্ষ্যে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে। আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ গ্রামের এই অদম্য মেধাবীর সাফল্যের খবর শুনে চোখের পানি আটকাতে পারেনি প্রতিবেশিরাও। আর তাদের মত গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সব সময় সহযোগিতা করেছিলেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী চৌধুরী।
আনোয়ারা উপজেলার দক্ষিণ বন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ছিলো ৮৮ শতাংশ। যা উপজেলায় দ্বিতীয় স্থানে অধিকার করেছে। ৬৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছিলো ৫৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ৪ জন। তারা হলেন- সামিয়া জামান, উম্মে ফাতেমা রেশমী, রিপা আকতার ও সাদিয়া আফরোজ। তাদের প্রত্যেকের জীবন যেন একেকটি সংগ্রাম আর কষ্টের কাব্যগাঁথা।
সামিয়া জামানের বাবা জাহিদ হোসেন টিংকু ক্ষুদ্র আসবাবপত্র ব্যবসায়ী। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কলেজে। উম্মে ফাতেমা রেশমীর বাবা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত, মা এনজিও সংস্থার মাঠকর্মী, ডাক্তারী পাশ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার স্বপ্ন তার। রিপা আকতারের বাবা মোহাম্মদ হাসান পেশায় রিকশা চালক। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণে তাঁর একমাত্র লক্ষ্য নিয়ে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে উঠে এসে চমকপ্রদ ফলাফলের কারণে স্বভাবতই শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পরিচালনা কমিটি সবাই প্রচেষ্ঠাই আসল চাবি কাঠি বলে মনে করেন এ চার শিক্ষার্থী।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড