• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পর্যটন শিল্পের এক অপার সম্ভাবনা 'সোনাগাজী মুহুরী প্রজেক্ট'

  ফেনী প্রতিনিধি

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৪
সোনাগাজী মুহুরী
সোনাগাজী মুহুরী প্রজেক্ট

ফেনীর সোনাগাজীর মুহুরী প্রজেক্ট পর্যটন শিল্পের জন্য এক অপার সম্ভাবনাময় স্থান। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প সোনাগাজীর মুহুরী প্রজেক্ট হিসেবে পরিচিত এটি।

বঙ্গোপসাগরের উপকূল এলাকায় চিত্তাকর্ষক নৈসর্গিক শোভা ও মনোমুগ্ধকর অসংখ্য দৃশ্য বিদ্যমান। ঠিক এর ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নির্মিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল। ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই এলাকাটি অপার সম্ভাবনাময় এলাকা হিসেবে গুরুত্ব বহন করে।

প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৮২ সালে নির্মিত মুহুরী সেচ প্রকল্পের ৪০ গেট বিশিষ্ট রেগুলেটর ও ক্লোজার ড্যামটি দেখতেও বেশ আকর্ষণীয়। এছাড়া নদীর পাড়ে সবুজ বনানী ঘেরা মায়াবী পরিবেশ। শীতকালে অতিথি পাখির আগমন ও তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে এই এলাকা।

পর্যটকদের পদচারণায় সরগরম হয়ে ওঠে এলাকাটি। প্রকৃতি প্রেমীরা যে আসে তাকেই মুগ্ধ করবে এখানকার প্রকৃতি। নদীর পানিতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে দারুণভাবে। এই সেচ প্রকল্প এলাকার চারপাশে রয়েছে সবুজের সমারোহ।

এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদার করতে স্থাপন করা হয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। মুহুরী নদীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভাসমান মাচ চাষ, নদীতে জাল ফেলে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ, ডেইরি ফার্ম, ব্যক্তিগত পর্যায়ে নার্সারি ও এগ্রো খামারসহ ইত্যাদি চোখ জুড়ানো দৃশ্য মনে রাখার মতো।

জীবন জীবিকার তাগিদে খেটে খাওয়া মানুষদের হরেক রকম জীবন কর্মের দৃশ্যও দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষের থেকে একটু ভিন্ন। নদীতে জাল ফেলে নোনা পানিতে ভেসে চিংড়ি পোনা সংগ্রহের দৃশ্য সবার নজর কাড়বে। প্রকৃতি আর মানুষের ভালবাসায় আতিথেয়তা যে কোনো পর্যটকের কোমল মনে সমাদৃত থাকবে বহুকাল।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পর্যটন কেন্দ্র বা নগরী হিসেবে গড়ে ওঠার কথা থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের সদিচ্ছার অভাবে কাঙ্খিত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। গড়ে ওঠেনি হোটেল মোটেল ও বিলাসবহুল দোকান পাট। প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটকদের হৃদয় কাটলেও থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থার অভাবে অনেককে নিরাশ হতে হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আধুনিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতো বলে স্থানীয়দের দাবি।

নদীতে নৌকার সারি, মাছ ধরা ও নৌকা ভ্রমণের দৃশ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষদের আকৃষ্ট করে। মুহুরী সেচ প্রকল্পের ৫০০ গজ দূরে অবস্থিত দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যা ৬ একর ভূমির ওপর ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৫ সালে স্থাপন করা হয়। দরকার মানসন্মত থাকা ও খাওয়ার হোটেল। বেশি দরকার এলাকাবাসীর সহযোগী মনোভাব যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভ্রমণে অসুবিধা বা অস্বস্তি দূর করতে সহায়ক হবে।

এছাড়া পরিবহনের সংখ্যা ও মানবৃদ্ধি, পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, এলাকা ও স্থাপনাগুলো মনোরমভাবে সাজানো ও রক্ষণাবেক্ষণ, সোনাগাজী চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে মানুষের যাতায়াত সহজ করা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ সোনাগাজীর এ পর্যটন শিল্পকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। আর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে এখানে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

এ ব্যাপারে ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্যাহ জানান, সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেডএম কামরুল আনাম জানান, অপার সম্ভাবনাময় এলাকাটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ার পাশাপাশি এলাকার বেকার লোকদের কর্মসংস্থানেরর সুযোগ সৃষ্টি হতো।

সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, এলাকাটি সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্রের আওতায় আসলে এলাকাবাসীর জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হত এবং সরকারও লাভবান হতো।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড